অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: বেআইনি বহুতল ভেঙে গার্ডেনরিচে (Garden Reach Building Collapse) মৃত্যুমিছিল লম্বা হচ্ছে। রাতের দিকে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯। ২২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখনও ধ্বংসস্তূপে ২ জন আটকে বলে জানালেন উদ্ধারকারীরা। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতাল-নার্সিংহোমে ভর্তি ১২জন।  আলোর অভাবে আজকের মতো বন্ধ উদ্ধার অভিযান খবর সূত্রে। গ্রেফতার হয়েছে ওই নির্মীয়মাণ বহুতলের প্রোমোটার। ধৃতের  বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা সহ একাধিক ধারায় মামলা পুলিশের। 


বিশদ...
ঘড়িতে রাত ১২টা বাজতে তখন বেশ কিছুক্ষণ বাকি। এমন সময়, হঠাৎই গার্ডেনরিচের ফতেপুরে ব্যানার্জিপাড়া লেনে ভেঙে পড়ে ওই বহুতল বাড়ি। কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিপত্তির ঘটনায় রাত থেকেই তুমুল হইচই শুরু হয়ে যায়। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই একের পর এক মর্মান্তিক খবর আসতে থাকে। তার পর থেকে বেলা যত গড়িয়েছে, তত লম্বা হয়েছে মৃতের তালিকা। সোমবার শেষ পাওয়া পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ে অন্তত ৯ জনের প্রাণ গিয়েছে। তবে এতেই যে মৃত্যুমিছিল শেষ হচ্ছে, তা নিশ্চিত করে বলার জায়গা নেই। কারণ উদ্ধারকারীদের আশঙ্কা, বিপর্যয়ের প্রায় ২২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ধ্বংস্তূপের তলায় ২ জন চাপা পড়ে থাকতে পারে। তা ছাড়া আরও ১২ জন গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতাল-নার্সিংহোমে ভর্তি। সেক্ষেত্রে মৃতের সংখ্যা কোথায় পৌঁছবে, তা নিয়ে উদ্বেগের চোরাস্রোত থাকছেই।


যা যা ঘটল...
এদিন সকালে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে পৌঁছে যান কলকাতা পুলিশের কমিশনার। আসেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, মেয়র ফিরহাদ হাকিম। একটু পরই শোনা যায়,ধ্বংসস্তূপের নিচে যাঁরা আটকে রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু খোদ মেয়রের বিধানসভা এলাকাতেই কী ভাবে চলছিল  এমন বেআইনি বহুতল নির্মাণ? প্রশ্নের মুখে বাম আমলের দিকে আঙুল তোলেন ফিরহাদ হাকিম। পাল্টা, রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন, 'বাংলায় ব্যাপক ভাবে বেআইনি নির্মাণের দায় কার? ফিরহাদ হাকিমের জন্য বন্দর এলাকায় বেআইনি নির্মাণ হয় শামস ইকবালের মদতে। ঘোরেন ৫ কোটির গাড়ি নিয়ে।'  শামস ইকবালের গ্রেফতারির দাবি জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সকাল সাড়ে নটার একটু আগে ঘটনাস্থলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাথায় ব্যান্ডেজ বাধা অবস্থাতেই এলাকা ঘুরে দেখেন। অন্য দিকে, ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে মৃতের সংখ্যা। 'দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়', গার্ডেনরিচের ঘটনা নিয়ে মন্তব্য রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের। সন্ধের দিকে জানা যায়, মৃতের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ৯-এ। এই বিপর্যয়ের তদন্তে নেমেছে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। খুন, খুনের চেষ্টা, গাফিলতির ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশের। 


 


আরও পড়ুন:‘BJP রাখতে পারল না’, বলেছিলেন সেবার, ২২ মাসেই ফের পদ্মমুখী অর্জুন, ব্রিগেডেই মন পরিবর্তন