কলকাতা : ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির (BJP) ১৮ টি আসনে জয়লাভের পরই পশ্চিমবঙ্গে দলবদলের পালা শুরু হয়।  বিশেষত বিধানসভা নির্বাচনের আগে  একের পর এক নেতা জার্সি বদলাতে শুরু করেন। বিজেপির যোগদান মেলাতে স্থানীয় নেতা-কর্মী থেকে জোড়াফুলের বড় নেতারা পদ্মশিবিরে নাম লেখান। সেই সময় শোরগোল ফেলেছিল তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী দেবাংশু ভট্টাচার্যের একটি সোশ্যাল পোস্ট। যেখানে দেবাংশু (Debangshu Bhattacharya) লেখেন, ‘গদ্দারেরা ফিরলে আমি তৃণমূল ভবনের সামনে শুয়ে থাকব।’


'চৌকাঠে শুয়ে পথ আটকাব'


তৃণমূলের তরুণ নেতা দেবাংশু তখন কিছুটা অভিমানের সুরেই দলবদলুদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন, চৌকাঠে শুয়ে পথ আটকাবেন তাঁরা ভবিষ্যতে কেউ দলে ফিরতে চাইলে। কিন্তু, তারপর প্রেক্ষাপট বদলেছে। বড় জয় পেয়ে তৃতীয়বারের জন্য বাংলায় ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর আবার শুরু হয় উল্টো স্রোত। তৃণমূল - ত্যাগীরা আবার ঘরে ফিরতে শুরু করেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল থেকে মুকুল রায় সবাই একে একে সবুজ প্যাভিলিয়নে ফিরে আসেন। তখনও ফের কটাক্ষের শিকার হন দেবাংশু। আর এবারও প্রশ্নের মুখে দেবাংশুর সেই দিনের মন্তব্য। কী বলবেন তিনি অর্জুন সিংহর ফিরে আসা নিয়ে ? 

র্জুন সিংহর ফিরে আসা নিয়ে দেবাংশু 
ABP Ananda - র ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে এই প্রশ্ন করা হলে তাঁর উত্তরে দেবাংশু যা বলেন, তার সারবত্তা দাঁড়ায়, এই মুহূর্তে দলের একমাত্র লক্ষ্য  বিজেপিকে রাজনৈতিকভাবে সমূলে উৎপাটন করা। তার জন্য রাজনৈতিক ভাবে যা যা করার দরকার, তা করতে হবে। তিনি বলেন, ব্যারাকপুরে বিজেপি মানেই অর্জুন সিংহ ! আর এই মুহূর্তে  ' 'গ্যাসের দাম যাঁরা হাজারের উপর নিয়ে গিয়েছে, যাঁরা সরষের তেলের দাম ২০০ টাকা করেছে' , তাদের হঠানোটা প্রয়োজন। 
এই বক্তব্যের পর খোঁচা দিতে ছাড়েননি বিজেপি নেতা প্রণয় রায়। তিনি দেবাংশুর পুরনো বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন,  'আসলে দেবাংশুর রাজনৈতিক মা এখন তাঁর সঙ্গে সৎ মায়ের মতো আচরণ করছেন। তাই তিনি কালীঘাটে বসে রইলেন ফেসবুক লাইভ দেবেন বলে, আর অর্জুন চলে গেলেন ক্যামাক স্ট্রিটে।' রাজনৈতিক-মা বলতে প্রণয় রায়ের ইঙ্গিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই ছিল। 
সঙ্গে সঙ্গে দেবাংশুর পাল্টা ' ওটা তো আমাদের সাংসারিক বিষয়, ওটা আমরা গুছিয়ে নেব। কিন্তু প্রবীর ঘোষাল যখন বালিখাল পার করে গণভবনের দিকে এগোচ্ছিলেন, তখন কি তিনি আটকাতে পেরেছিলেন?  '
সেখানে এসে পড়ে দিলীপ ঘোষের প্রসঙ্গও। তিনি বলেছিলেন, তাঁদের ড্রয়িংরুমে সকলে স্বাগত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা গিয়েছে শাসকদলে 'ঘরওয়াপসি'র পালা শুরু হয়ে গিয়েছে হইহই করে। এমনকী শুধু প্রাক্তন তৃণমূলীরা নন, পদ্ম থেকে জোড়াফুলে এসেছেন বাবুল সুপ্রিয়ও। 
অর্জুন সিংহর ঘরওয়াপসি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলছেই। আর এরই মধ্যে সামনে আসছে পুরনো মন্তব্য পাল্টা মন্তব্য় ।