সোমনাথ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরও বন্ধ হল না কাঠ পাচার। গড়বেতা ৩ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির আমবাগান থেকে চুরি গেল বেশ কয়েকটি গাছ। এ নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।


গড়বেতা থেকে নারায়ণগড়, আদতে জঙ্গলমহল কিন্তু, সেখানেই ক্রমেই হারাচ্ছে সবুজ৷ এরইমধ্যে, এবার, গড়বেতা ৩ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির একটি আম বাগান থেকে বেশ কয়েকটি গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল, স্থানীয় এক কাঠ চেরাই কারখানার মালিক ও তাঁর ছেলেকে। 


কয়েকমাস আগে, মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বেআইনিভাবে গাছ কাটা রুখতে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বন কার কার বিডিওর আন্ডারে পড়ে? গড়বেতা, শালবনি, কেশয়াড়ি, কেশপুর। আপনার বিশেষ নজর দেবেন, কারা এই কাঠ চুরির সঙ্গে যুক্ত সঙ্গে সঙ্গে থানায় অভিযোগ জানাবেন।" 


কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের কাঠ চুরির অভিযোগ। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির বাগান থেকে চুরি হয়ে গেল গাছ! গড়বেতা ৩ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল নেতা ও সভাপতি নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা কোন গাছ কাটার অনুমতি দিইনি যদি কেউ গাছ কেটে থাকে তাহলে সেটা সমপূর্ণ বেআইনি, প্রশাসন আইনা লোক ব্যবস্থা নেবে।" এই ঘটনা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর। 


আরও পড়ুন, 'আমাকে তুলে নিয়ে যাও', বিয়ের দিন জানিয়ে ১০ টাকা নোটে প্রেমিককে আর্জি কনের


পশ্চিম মেদিনীপুরের বিজেপির গড়বেতা ৩ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা ও সম্পাদক গৌতম কৌরি বলেন, "তৃণমূলের কাজই চুরি করা তাই মুখ্যমন্ত্রী বলার পর কয়েকজনকে এরেস্ট করেছে সামনে আবার পঞ্চায়েত ভোট আসছে তাই তাদেরকে আবার জামিনে ছেড়ে দিয়েছে নতুন করে চুরি করার জন্য।" পশ্চিম মেদিনীপুরের সিপিএম সম্পাদক  সুশান্ত ঘোষ বলেন, "এদের প্রধান যিনি তিনিই যেখানে চুরি করছেন চুনোপুঁটিতে বলে বারণ করলে তারা কি শুনবে এভাবেই চোরদের রাজত্ব চলছে।" 


যদিও পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ও কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, "যেই গাছ কাটুক না কেন তদন্ত করে তাদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেব।" যদিও গাছ চুরির অভিযোগ মানতে নারাজ কাঠ চেরাই কারখানার মালিকের ছেলে। কাঠচুরির অভিযোগে ধৃত আমজাদ খান বলেন, "এলাকার একটি ক্লাবের ছেলেরা গাছ কেটে তার মিলে রাখে চেরাই করার জন্য। গাছগুলি কোন বৈধ কাগজপত্র ছিল না বলে তিনি বারণ করেন প্রথমে ওই কাঠ রাখতে তবে এলাকার লোকের চাপে পড়েই তিনি এগুলো রাখতে বাধ্য হন।" 


কাঠগুলি বাজেয়াপ্ত করেছে বন দফতর। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাঠ চেরাইয়ের কল।