উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, ধূপগুড়ি : উপনির্বাচনে ধূপগুড়ি পুনরুদ্ধার তৃণমূলের (TMC)। বিজেপিকে (BJP) হারিয়ে ধূপগুড়ি দখল করল শাসকদল। প্রার্থী বাছাই থেকে ভোট পরিচালনা, পুরোটারই দায়িত্বে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তবে, কি তাঁর কৌশলেই বাজিমাত? এমনই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্য়দিকে, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে, বিজেপির দেশাত্মবোধ উস্কে দেওয়ার স্ট্র্য়াটেজি যে সফল হয়নি, তা ধূপগুড়ির ফলাফলেই কার্যত স্পষ্ট।


প্রার্থী বাছাই থেকে ভোট পরিচালনা, অভিষেকের স্ট্র্য়াটেজিতেই কি ধূপগুড়িতে জয় ছিনিয়ে এনেছে তৃণমূল ? ২০১৬ সালে সিপিএমকে হারিয়ে, তৃণমূলের টিকিটে ধূপগুড়ি কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন মিতালি রায়। কিন্তু ২০২১-এ বিজেপি এই কেন্দ্রটি ছিনিয়ে নেওয়ায়, মিতালির ওপরে আর ভরসা করতে পারেনি তৃণমূল। মিতালির বদলে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এমন একজনকে প্রার্থী করেন যিনি পেশায় অধ্য়াপক।


নির্মলচন্দ্র রায়। কামতাপুরী আন্দোলনের অত্য়ন্ত বড় প্রচারক। এদিকে, বিজেপি যাঁকে প্রার্থী করে, সেই তাপসী রায়ের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর স্বামী পুলওয়ামায় শহিদ হয়েছিলেন। দেশাত্মবোধ উস্কে দেওয়ার বিজেপির এই স্ট্র্য়াটেজি যে সফল হয়নি, তা ফলাফলেই কার্যত স্পষ্ট। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'বাংলা ভাগের নাম আর মুখে আনবেন না ৷ সামাজিক স্কিম আর শান্তিতে ভোটের জয় এসেছে। শুভেন্দু অধিকারী জনবিচ্ছিন্ন। সবাই দেখেছেন অবাধে ভোট হয়েছে। বিজেপির সাথে সবাই হাত মিলিয়েছিল। ওর মানসিক হতাশা বাড়বে।'


এখন দেখার, লোকসভা ভোটের আগে উত্তরবঙ্গ নিয়ে কী কৌশল নেয় গেরুয়া শিবির। প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের যে মাটিতে ২০১৯-এর লোকসভা ভোট (Lok Sabha Election) থেকে বিজেপি নিজের ভিত ক্রমশ শক্ত করছিল, তা কি এবার আলগা হতে বসেছে ? এর আগে ২০২২-এর ডিসেম্বরে রাজ্যের শতাধিক পুরসভার নির্বাচন ও মাস কয়েক আগে শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তাতে একটি পুরসভাও দখল করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিতে জিতলেও, একটিও জেলা পরিষদ গঠন করতে পারেনি বিজেপি।


যদিও প্রথমে পুরসভা ও পরে পঞ্চায়েত ভোটে পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্য়াপক সন্ত্রাসের অভিযোগ বারবার তুলেছে বিজেপি। কিন্তু ৫ সেপ্টেম্বর ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচন হয় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে। ভোটের নিরাপত্তায় শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনীই (Central force) মোতায়েন করা হয় ৩০ কোম্পানি। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয় ধুপগুড়ি। এতকিছু পরও নিজেদের আসন উপনির্বাচনে ধরে রাখতে পারল না গেরুয়া শিবির।


আরও পড়ুন- ধূপগুড়িতে জামানত বাজেয়াপ্ত বাম প্রার্থীর, 'মানুষ মনে করেননি আমরা পারব' আত্ম পর্যালোচনা সুজনের


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial