ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : সারা দেশে যত সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয় , তার মধ্যে অসংক্রামক রোগে (NCDs) মৃত্যুর সংখ্যাই বেশি। ভারতে যত মৃত্যু ঘটে, তার ৬৩% র জন্য দায়ী, অসংক্রামক রোগ। তার মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ ( High BP ) এবং ডায়াবেটিস ( Diabetes ) সংক্রান্ত সমস্যায় আক্রান্তের সংখ্যা শিউরে ওঠার মতোই। চমকে দেবে এ রাজ্যে হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। NFHS-5 ডেটা অনুসারে আনুমানিক ৯০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এখন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, ১ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক এ রাজ্যেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন।
কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৭৫ মিলিয়ন অর্থাৎ সাড়ে ৭ কোটি মানুষকে সরকারি উদ্যোগে সুচিকিৎসা দেওয়ার ( standard care ) লক্ষ্যে এগোচ্ছে। সেই তালে তাল মিলিয়ে রাজ্য সরকারও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে । ২০২৫ সালের মধ্যে রাজ্য সরকাররে স্বাস্থ্য দফতর উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৭৫ লক্ষ মানুষকে ভাল গুণমানের চিকিৎসা বা যত্নের উদ্যোগ নেবে।
উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগীদের নাম নিবন্ধন করা এই লক্ষ্যে পৌঁছনোর পয়লা ধাপ হবে। তারপর তারপর প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছ দিতে হবে পরামর্শ ,পরিষেবা ও সচেতনতা। সরকারের এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে গেলে প্রথমেই এই অসুখে আক্রান্ত মানুষদের চিহ্নিত করে নাম নথিভূক্ত করতে হবে। আক্রান্তদের মধ্যে কমপক্ষে ৮০ %কে তালিকাভুক্ত করা প্রধান উদ্দেশ্য হবে। যাদের মধ্যে সিংহভাগের বয়স হবে ৩০ বছরের বেশি। । সরকার খেয়াল রাখবে, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে অন্তত ৬০ শতাংশের যেন প্রাথমিক স্তরেই রোগনির্ণয় হয় ও চিকিৎসা দেওয়া যায়। নথিভুক্তদের মধ্যে অন্তত ৫০% যাতে সুচিকিৎসা পেয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, সে-দিকে নজর রাখা হবে।
হাইপারটেনশন ও ডাাবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের লক্ষ্য গুলি হল -
- ২০২৫ সালের মধ্যে রাজ্যের ৭৫ লক্ষ মানুষ যাঁরা হাইপারটেনশন আর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত , তাদের সুষ্ঠু চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্য দফতর।
- আশা কর্মী থেকে সরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ সমন্নয় করে এই রোগে আক্রান্তদের চিহ্নিত করে, চিকিৎসা শুরু করার লক্ষ্য পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
- কোভিড পরবর্তী কালে noncommunicable বা সংক্রামক নয়, এমন রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য দফতরের তরফ এত বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে জনস্বাস্থ্যের কথা ভেবেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে দেশের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে যেন, মেডিক্যাল কলেজগুলির ক্যাম্পাসের ক্যানটিনের খাবার স্বাস্থ্য সম্মত হয়। যতটা সম্ভব খারাপ চর্বি বর্জিত খাবার রাখার ওপর জোর দিয়েছে কেন্দ্র। সেই সঙ্গে ক্যানটিনে সফট ড্রিংকস না রাখতেও বলা হয়েছে। সার্বিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবে শাক-সবজি জাত খাবার বেশি রাখার ওপর জোর দিচ্ছে সরকার। খাবারে কম নুন দেওয়া, ফাস্ট ফুড না রাখার মতো পদক্ষেপ ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশনের রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী হতে পারে। এছাড়াও, সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের ক্যাম্পাস তামাক ও মাদক মুক্ত রাখতে হবে বলে জানানো হয়েছে ওই নোটিসে। কারণ, সুস্বাস্থ্যের জন্য চিকিৎসক সমাজকেই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে বলে মনে করছে সরকার।
আরও পড়ুন :
সন্দেশখালি যাওয়ার পথে 'পুলিশি বাধা', গ্রেফতার নৌশাদ সিদ্দিকি