শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: কোচবিহারে দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে একাধিক অভিযোগ শুনতে হল প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ ও প্রাক্তন জেলা সভাপতিকে! অন্যদিকে সরকারি হোমে ঢুকতেই পারলেন না কোচবিহারের জেলা সভাধিপতি। 


হোমে ঢুকতে বাধা:
সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে নানা জেলায় বারবার নানা ক্ষোভ বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে দিদির দূতেদের। শনিবার সকালে দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে বেরিয়ে, কোচবিহারের গুড়িয়াহাটি এক নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় যান দিদির দূত, তৃণমূল নেতা ও কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি উমাকান্ত বর্মন এবং পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল আহমেদ। সেখানে বাবুরহাটের সরকারি হোম শহিদ বন্দনা স্মৃতি মহিলা আবাস পরিদর্শনে যান তাঁরা। 
কিন্তু সেখানে প্রথমে তাঁদের ঢুকতে বাধা দেন হোমের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিলা আধিকারিক। ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় সভাধিপতিকে। কোচবিহারের জেলা সভাধিপতি ও তৃণমূল নেতা উমাকান্ত বর্মনকে বলতে শোন যায়, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা প্রজেক্ট চলছে। দিদির সুরক্ষা কবচ। দিদির দূত হিসেবে গুড়িয়াহাটি ১ জিপিতে আমি এসেছি। সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ভিজিট হল। পাশে যেহেতু শহিদ বন্দনা স্মৃতি মহিলা আবাস আছে সেখানে আমি আর আমার কর্মাধ্যক্ষ ভিতরে গিয়ে পরিবেশটা একটু দেখব। অন্য কেউ আর যাবে না। ডিএম সাহেব বললেন, আপনারা যান ঘুরে আসুন। আপনাকে ফোনটা দিলাম। ডিএম সাহেব আপনাকেও বলে দিল। তারপরও আপনি আমাকে ওমুককে ফোন করবেন, তমুককে ফোন করবেন..কোনও খবর নাই, আমি দাঁড়িয়ে আছি।' ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থাকার পর শেষে হোমে ঢোকার অনুমতি মেলে। কিন্তু এদিন আর সরকারি হোমে যাননি দুই তৃণমূল নেতা। পরে উমাকান্ত বর্মন বলেন,'অনেকক্ষণ ছিলাম। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করার সময় হবে না। তাই ভিজিটের জন্য গেলাম না। ডিএম সাহেবকেও বলব। অনেক অভিযোগ রয়েছে। সেই কারণেই হতে পারে।'


ওষুধ নিয়ে প্রশ্ন:
অন্যদিকে, দিদির সুরক্ষাকবচ কর্মসূচিতে এদিন দিনহাটার ভিলেজ ওয়ান গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগ্নি ১ গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনে যান তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি এবং এনবিএসটিসি (NBSTC) চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়। সেখানে গিয়ে তাঁকে পরিষেবা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়! এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, 'অল্প কিছু আছে মেট্রোজিল। ওআরএসটাও নেই। এখন ওষুধ খুব কম। কিন্তু পাবলিক তো বোঝে না। এসে বলে ওষুধ নেই, ওষুধ নেই।' বেতন, শৌচাগার নিয়ে অভিযোগ করেন এক আশাকর্মী। ছুটি না থাকা নিয়েও অভিযোগ করেন। যদি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, 'আমাকে তো প্রশংসাই করল। আপনাদের কী অভিযোগ করেছে জানি না। একটু ওষুধের সমস্যা রয়েছে।'


গোটা ঘটনায় কটাক্ষ করেছে বিজেপি। জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, 'এটা হওয়ারই ছিল। দুর্নীতি দেখে মানুষ এদের ওপর তিতিবিরক্ত।' এদিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন নিয়ে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন কোচবিহারের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। 


আরও পড়ুন: ত্রিপুরায় বাম-কংগ্রেস আসন সমঝোতা কেন? দলীয় বৈঠকে বোঝালেন ইয়েচুরি