রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: গতকাল নতুন করে আগুন জ্বলে ওঠে সন্দেশখালিতে (Sandeshkhali)। সন্দেশখালির বেড়মজুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা। এদিকে সন্দেশখালিতে পুলিশি টহলদারির মাঝেই উত্তেজনার আগুন নেভাতে গিয়ে পাল্টা ক্ষোভের মুখে পড়েন আজ রাজ্যের দুই মন্ত্রী। তবে কি সন্দেশখালি নিয়ন্ত্রণের বাইরে? মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। সঙ্গে প্রসঙ্গ উঠতেই তীব্র আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee)।


সন্দেশখালি কি নিয়ন্ত্রণের বাইরে?


এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'ওই জায়গা কোনওদিন কন্ট্রোলে ছিলই না। আজ পুলিশ আধিকারিক এবং তৃণমূলের নেতারা যাচ্ছেন। বছরের পর বছর ওখানে অত্যাচার হয়েছে। কেউ খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন? আজ মানুষের পিঠ দেওয়ালে থেকে গিয়েছে। তারা রাস্তায় নেমেছেন। রাজীবকুমার গিয়ে বলছেন ৮ দিনে ঠিক করে দেব। এরকম কত ৮ দিন চলে গেছে। ঠিক করেননি কেন ? কোথায় ছিলেন? দিনের পর দিন ধর্ষণ অত্যাচার হয়েছে। থানায় গিয়ে ফিরে এসেছেন। অভিযোগ নেওয়া হয়নি। পঞ্চায়েতে ভোট লুঠ হয়েছে। ভেড়ি দখল হয়েছে। পুলিশ অভিযোগকারীদের থানা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। রাজ্যে সন্দেশখালির মতো এরকম বহু জায়গা আছে।' 


বিজেপির সব নেতা সন্দেশখালি যেতে মরিয়া কেন ?


বিজেপির সব নেতা সন্দেশখালি যেতে মরিয়া কেন ? এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'রাজ্যে এরকম বহু এলাকা আছে যেখানে একেকজন মুসলিম গুন্ডাকে নেতা বানানো হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম শেখ শাহাজাহান। দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া,মালদা, মুর্শিদাবাদ। যারা মাফিয়া ছিল তারা নেতা হয়ে গিয়েছে। তারা হাতেখড়ি করেছে সিপিএম আমলে। পরে তৃণমূলের হাত ধরেছে। পঞ্চায়েতের সমস্ত সিট ওদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।একটা লোক এমন নয় যে ঠিকঠাক আছে। তারাই তৃণমূলের কিং পিন। তারাই টাকা দেয়। তারাই ভোট করায়। তৃণমূল দল টা এদের ওপরেই দাঁড়িয়ে আছে। তাদের গায়ে হাত পড়েনা। এমন সব জায়গা যেখানে ইডি সিবিআই চট করে গিয়ে কিছু করতেও পারবে না। মানুষ বুঝেছে তাদের ধর্ম সংস্কৃতি মান সম্মান রক্ষা করতে গেলে তাদেরকেই রাস্তায় নামতে হবে।' 


'তৃণমূল ভয় পেয়েছে, পুলিশ ভয় পেয়েছে'


 বিজেপি মহিলা মোর্চা ভোজেরহাটে রুদ্ধ। আটক হন লকেট। গোটা ঘটনায় দিলীপের প্রতিক্রিয়া, 'তৃণমূল ভয় পেয়েছে। পুলিশ ভয় পেয়েছে। কারণ ভিতরে সাধারণ মানুষ আন্দোলন শুরু করেছে। তাদের সাহস বেড়েছে। তারা পুলিশ কে ঢুকতে দিচ্ছেন না। পুলিশ হাত জোর করছে। চোখ রাঙাচ্ছে। ফল হচ্ছে না। বাকি যারা তাদের পাশে দাঁড়াতে ওখানে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, তাদের আটকানোর চেষ্টা চলছে। বিজেপি শুরু করেছিল। তারপর বাকি বিরোধীরা যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সমস্ত কমিশন গেছে। কিছু একটা লুকোনোর চেষ্টা চলছে।' 


'মহিলার পায়ের ওপর দিয়ে পুলিশের গাড়ি'


এদিকে গতকাল মহিলার পায়ের ওপর দিয়ে পুলিশের গাড়ি চলে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'পুলিশ কি স্বীকার বা অস্বীকার করল তাতে এখন আর কিছু যায় আসে না। পুলিশকে এখন ওখানে কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। চাকরি বাঁচাতে পুলিশকে ওখানে যেতে হচ্ছে। ওখানে পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের যাওয়া উচিৎ। উনি ৫০০ টাকা দিয়ে সমর্থন কিনে নিয়েছেন। তাহলে তো ওখানে যাওয়া উচিৎ ওনার। উনি গিয়ে বলুন, আমি আছি চিন্তা নেই। কিন্তু ওনার যাওয়ার হিম্মত নেই।' 


'দুধের ছেলেকে কেউ পাত্তা দেয় ?'


আরও পড়ুন, 'আসতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে..', সন্দেশখালিতে গিয়ে পাল্টা ক্ষোভের মুখে ২ মন্ত্রী


অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাবেন ১০ তারিখ। এই প্রসঙ্গে দিলীপের প্রতিক্রিয়া, 'ওকে কে পাত্তা দেয়। দুধের ছেলেকে কেউ পাত্তা দেয় ? দুধের বোতল নিয়ে রাজনীতি করছেন। উনি তৃণমূলের জন্য বড় নেতা হতে পারেন। যারা তৃণমূলের মাধ্যমে করে খায়, তাঁদের জন্য উনি বড় নেতা।  কী অবদান ওনার? কী যায় আসে?'