রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: কেউ সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছেন ২০৩৬ পর্যন্ত। কেউ আবার বলছেন, ২০২৪-এই ঘটে যাবে রদবদল। প্রধানমন্ত্রী পদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিযুক্তি এখন সময়ের অপেক্ষা বলে দাবি করছেন তৃণমূলের বড় থেকে ছোট নেতারা। তার মধ্যেই তৃণমূলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বলে নতুন জল্পনা উস্কে দিলেন রাজ্য বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি তথা দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, মমতা জায়গা ছাড়ছেন না, তাতেই দমবন্ধ হয়ে আসছে অভিষেকের।  তাই এ সব করানো হচ্ছে। 


নয়া জল্পনা উস্কে দিলেন দিলীপ


নিময়মাফির বুধবার ইকোপার্কে প্রাতঃর্ভ্রমণে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন দিলীপ। তৃণমূল নেতানেত্রীদের সাম্প্রতিক টুইটারসমূহ নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, "আসলে এটা করানো হচ্ছে। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জায়গা ছাড়ছেন না। ২০১৯ থেকে দিদি প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে ব্যানার লাগিয়ে হাওয়া গরম করা হচ্ছে।  ব্রিগেডের মাঠে সভা করে আওয়াজ তোলা হয়েছিল দিদিকে দিল্লি পাঠানোর। কিন্তু দিদি ৩৪ থেকে ২২-এ নেমে গেলেন। ১২টি আসন গায়েব হয়ে গেল। গত জানুয়ারির নির্বাচনেও হাওয়া গরম করা হল বিস্তর। কিন্তু মানুষ হারিয়ে দিলেন।"


গত কয়েক দিনে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ থেকে দলের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার, প্রধানমন্ত্রী পদে মমতা এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে অভিষেককে নিয়ে নিজের নিজের মতো করে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। গোটা বিষয়টিই তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন দিলীপ। তাঁর কথায়, "ওঁর বোঝা উচিত যে পার্টির লোকেরা আর তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চাইছেন না। পিছনের দরজা দিয়ে তিনি ফের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। জায়গা ছাড়ছেন না বলে পার্টির লোকেদের এবং ভাইপোর দমবন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই গদি ছেড়ে ২০২৪-এ বিছানাপত্র গুটিয়ে তাঁকে দিল্লি পাঠানোর অজুহাত  দেওয়া হচ্ছে। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরানোর জন্য মুভমেন্ট তৈরি করা হচ্ছে।"


অভিষেককে মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চেয়ে একাধিক টুইট 


সম্প্রতি কুণাল জানান, মমতার পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসবেন অভিষেক। সোশ্য়াল মিডিয়ায় লেখেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের এক সৈনিক হিসেবে বলতে পারি, ২০৩৬ সাল পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতাদি। আর সেই ২০৩৬ সালে তিনি অভিভাবকের মত উপস্থিত থাকবেন এমন অনুষ্ঠানে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নেবেন অভিষেক।"


এর পর মঙ্গলবার অপরূপা আরও এদ ধাপ এগিয়ে জানিয়ে দেন, ২০৩৬ নয়, ২০২৪-এই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন মমতা। আর বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন অভিষেক। ঘটনাচক্রে কুণাল এবং অপরূপা, দু'জনই তৃণমূলের অন্দরে অভিষেকপন্থী হিসেবে পরিচিত।  মমতা ছাড়া কাউকে নেতা মানেন না বলায়, কয়েক মাস আগে শ্রীরামপুর সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণও করেছিলেন দু'জনে। এ বার দিলীপ সেই বিভাজনের তত্ত্বে আরও ইন্ধন জোগালেন।


আরও পড়ুন: Aparupa Poddar: কুণালকেও ছাপিয়ে গেলেন অপরূপা, '২০২৪-এই প্রধানমন্ত্রী হোন মমতা, অভিষেক মুখ্যমন্ত্রী', বললেন সাংসদ