কলকাতা: আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী জোটের ভিত পাকা হয়নি এখনও পর্যন্ত। তার আগেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চেয়ে তদ্বির করতে দেখা গেল আরামবাগের তৃণমূল (TMC) সাংসদ অপরূপা পোদ্দারকে (Aparupa Poddar)। তিনি জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে মমতাকে সঙ্ঘ মনোনীত রাষ্ট্রপতির থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে দেখতে চান। বাংলায় তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করতে দেখতে চান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee), যেখানে 'বিজেপি-র গোবর্ধন' জগদীপ ধনকড়ের থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন তিনি। 


মমতাকে প্রধানমন্ত্রী, অভিষেককে মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চান অপরূপা


মঙ্গলবার নেটমাধ্যমে নিজের এমন আশা-আকাঙ্খার কথা জানিয়েছেন অপরূপা। এ দিন তিনি লেখেন, 'আমি চাই, আমাদের দিদি ২০২৪-এ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আরএসএস মনোনীত রাষ্ট্রপতির হাত থেকে। আর এই বিজেপি-র গোবর্ধন জগদীপ খনকড়ের থেকে বাংলা ২০২৪-এ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আমাদের প্রিয় যুবনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।'


এক দিন আগে, এই বিষয়ই ছুঁয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষকে। নেটমাধ্যমে লম্বা পোস্টে তিনি জানান, মমতার পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসবেন অভিষেক। কুণাল লেখেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের এক সৈনিক হিসেবে বলতে পারি, ২০৩৬ সাল পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতাদি। আর সেই ২০৩৬ সালে তিনি অভিভাবকের মত উপস্থিত থাকবেন এমন অনুষ্ঠানে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নেবেন অভিষেক।"



আরও পড়ুন: Modi in Germany: জার্মানি থেকেও কংগ্রেসকে আক্রমণ মোদির, কটাক্ষ রাজীব গাঁধীকে


তৃণমূলের তৃতীয় বার জয়ের বর্ষপূর্তির দিন ফেসবুক পোস্টে কুণাল এমন দাবি করায় জল্পনা শুরু হতে সময় লাগেনি। এ নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলে কি না, সেদিকেই নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু সকাল হতেই কুণালকে ছাপিয়ে গেলেন অপরূপা। ২০৩৬ নয়, ২০২৪-এই পরিবর্তন দেখতে তিনি মুখিয়ে বলে জানান। ঘটনাচক্রে কুণাল এবং অপরূপা. দু'জনই তৃণমূলের অন্দরে অভিষেকপন্থী হিসেবে পরিচিত। 


তবে তৃণমূল নেতাদের এমন আকাঙ্খাকে 'দিবাস্বপ্ন' হিসেবেই দাগিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী আর ভাইপোকে তোষামোদ করার প্রতিযোগিতা চলছে। তার চেয়ে এখনই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী এবং ভাইপোকে রাষ্ট্রপতি বানিয়ে দিলেই ঝামেলা মিটে যায়। আমরা তো চাই, আমাদের লোকজন বড় বড় জায়গায় যাক। কিন্তু তার তো ভিত্তি থাকতে হবে! আমরা রাজনীতি করি, জ্যোতিষচর্চা নয়। যাঁরা জ্যোতিষচর্চা করেন, তাঁরাই এ সব ভাল বলতে পারেন।"



তৃণমূলে বিভাজন তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি-র


রাজ্য বিজেপি-র নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "আসলে অভিষেকের আর তর সইছে না। পারলে মমতাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে গদি থেকে নামিয়ে নিজে বসে পড়ে। তারই সূচনা এই অবস্থা। এই জাতীয় কথা যাঁরা টুইট করছেন, তাঁরা অভিষেক অনুগামী। দিল্লির লোভ দেখিয়ে মমতাকে গদি ছাড়াও।  কিন্তু দিল্লিও হবে না, এদিকও যাবে। গভীর চক্রান্ত চলছে, যা আগামী দিনে তৃণমূলের সর্বনাশ করবে।এটা তারই ইঙ্গিত।" এ নিয়ে তৃণমূলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।