কলকাতা: প্রায় একার কাঁধেই একসময় দলকে টেনে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে, বঙ্গ বিজেপি-তে ততই নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh)। দলের রাজ্য সভাপতির পদ আগেই খুইয়েছেন তিনি। এ বার বাংলার বাইরেই কার্যত টেনে নিয়ে যাওয়া হল তাঁকে। কারণ বুথ ভিত্তিক অভিযানে বাংলায় কোনও দায়িত্বই পেলেন না বিজেপি-র (BJP) সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ। তাতেই বাংলায় দলের সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) সঙ্গে দিলীপের সমীকরণ নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। 


বাংলায় দিলীপের গুরুত্ব কমল আরও!


২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে (Lok Sabha Election 2024) পাখির চোখ করে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সমস্ত রাজ্যকে পাঁচ নেতার মধ্যে ভাগ করে দিয়েছেন। ‘বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে’র জন্য গঠিত পাঁচ জনের ওই কমিটিতে রয়েছেন দিলীপ। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, সিকিম, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর এবং আন্দামানে বুথ ভিত্তিক সংগঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। বুথস্তর থেকে দলকে শক্তিশালী করে তোলার দায়িত্ব সঁপা হয়েছে তাঁদের হাতে। দলের কর্মীদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 


ওই কমিটির মাথায় রয়েছেন ওড়িশার বিজেপি নেতা বৈজয়ন্ত পান্ডা। কিন্তু ‘বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে’ দিলীপকে কেন বাংলার দায়িত্ব দেওয়া হল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আর তাতেই সুকান্তর সঙ্গে তাঁর সমীকরণ নিয়ে ফের শুরু হয়েছে কাটাছেঁড়া। বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির 'নামমাত্র' পদ দেওয়া হয় দিলীপকে। তাঁর জায়গায় আনা হয় সুকান্তকে। সেই থেকেই বাংলায় বিজেপি কার্যত আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। 


আরও পড়ুন: Sukanta Majumdar : "ভোট লুঠ করতে এলেই তাড়া করে মারতে হবে", মহিলা মোর্চার সভায় 'দাওয়াই' সুকান্ত মজুমদারের


বিজেপি-র অন্দরেই কান পাতলে শোনা যায়, বিজেপি-র অন্দরে এখন দুই গোষ্ঠী অবস্থান করছে। যাঁরা সাংগঠনিক পদে রয়েছেন, তাঁরা এক পক্ষ। ক্ষমতাচ্যূত হতে হতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে যাঁদের, অপর পক্ষ তাঁরা। দলে যাবতীয় বিদ্রোহ, অসন্তোষের জন্য এই এই ক্ষমতাচ্যূতদেরই দায়ী করেন দলের কর্তাব্যক্তিরা। আড়ালে-আবডালে থেকে তাঁরাই বিদ্রোহে উস্কানি জোগাচ্ছেন বলে অভিযোগ রাজ্য বিজেপি-র বর্তমান নেতৃত্বের। উস্কানি জোগানো সেই অংশের সঙ্গে বার বার দিলীপের নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দিলীপের আমলে যাঁরা রাজ্য বিজেপি-র হর্তাকর্তা ছিলেন, এক এক করে তাঁদেরও সরানো হচ্ছে ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে, যা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে দিলীপকে। রাজ্য নেতৃত্বকে অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। 


বিজেপি-র অন্দরে দ্বন্দ্ব


রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দিলীপের এই মুখ খোলার বিষয়টি বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কানেও পৌঁছেছে। খাতায়-কলমে রাজ্য বিজেপি-র কোনও দায়িত্বে না থাকা দিলীপকে তাই আরও বেশি করে অন্যত্র দায়িত্ব দিয়ে সরানোর চেষ্টা চলছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। দিলীপ যদিও জানিয়েছেন, দল গুরু দায়িত্ব দিয়েছে তাঁকে। মনপ্রাণ দিয়ে সেই দায়িত্ব পারন করার চেষ্টা করবেন।