অর্ণব মুখোপাধ্যায়, দিঘা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে গতকাল দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে হাজির হন সস্ত্রীক দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। আর তাঁর এই উপস্থিতির ফলে দলেই কটাক্ষের মুখে পড়েছেন বিজেপি নেতা। যা নিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। নাম না করে জবাব দিয়েছে সৌমিত্র খাঁয়ের আক্রমণেরও।  

কটাক্ষের জবাব দিলীপের: জগন্নাথ মন্দির দর্শন থেকে মমতার সাক্ষাৎ নিয়ে দলেই প্রশ্নের মুখে পড়েছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। আমল না দিয়ে ফের স্বমহিমায় জবাব দিলেন বিজেপি নেতা। স্পষ্ট বললেন, 'তৃণমূলের লোকজন জানে কে আসল বিজেপি, কারা উন্নয়নের সঙ্গে। আমি কাউকে শত্রু ভাবি না।'

এবিপি আনন্দ: তৃণমূলের বহু কর্মী স্বাগতম বলেছেন; বলেছেন দিলীপ ঘোষ এলে উন্নতি হবে, মন্দিরের কাজ ভাল হবে, কী বলবেন? 

দিলীপ ঘোষ: জয়বাংলাও তো বলেছে। গো ব্যাকও বলেছে। তৃণমূলের লোকজন জানে কে আসল বিজেপি। কারা উন্নয়নের সঙ্গে। তাঁরা আমাকে শত্রু ভাবে, রাজনীতিক ভাবে, আবার বন্ধুও ভাবে। কারণ আমি কাউকে শত্রু ভাবি না। যদি কেউ আমাকে স্বাগত করে, তাঁকে ধন্যবাদ। আমি যেখানে যাই দুরকম আওয়াজই আসে।

এবিপি আনন্দ: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কালকে সরাসরি কথা হল, তাঁর সম্পর্কে কী বলবেন? কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? 

দিলীপ ঘোষ: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মূল্যায়ন আর নতুন করে কী করব। আজ এখানে মন্দির কেন করতে হচ্ছে! কারণ উন্নয়নের রাস্তা বন্ধ। মানুষকে দেওয়ার মতো কিছু নেই। মন্দির করায় আপত্তি নেই। আমরাও অনেক জায়গায় মন্দির করেছি। কিন্তু আজকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের চাকরি নেই। শিক্ষা নেই। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সমস্যায়। সুরক্ষা নিয়ে চিন্তাুর ব্যাপার। মন্দির করুন না, কিন্তু সেটা যেন অ্যাজেন্ডা না হয়। 

এবিপি আনন্দ: আপনি কি বিজেপিতে কোণঠাসা? 

দিলীপ ঘোষ: কোণঠাসার কী আছে। দিলীপ ঘোষ রাস্তায় নামলে মিডিয়া, পাবলিক পিছনে থাকে। যাঁরা কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে তাঁরা চিন্তায় আছে।

এবিপি আনন্দ: সৌমিত্র খাঁ আপনাকে বলছেন এত আদর্শবান নির্লজ্জ পুরুষ দেখিনি, বাবুল সুপ্রিয়, মুকুল রায়কে তাড়িয়ে এখন সেই পথে হাঁটবেন, কী বলবেন? 

দিলীপ ঘোষ: আমি তাড়ালে অনেককে ফাঁকা করে দিতাম। আমার সময় কেউ যায়নি। আমি যাওয়ার পর অনেকে গিয়েছে। ধরে রাখতে পারেননি ওঁরা। উনি রোজ বলেন চলে যাব। ব্ল্যাকমেল করে টিকে আছেন। যে শুভেন্দু অধিকারীকে ১৪ পুরুষ তুলে গালাগালি দেয়। আবার বান্ডিলের জন্য পা ধরে। এসব লোকের কথার জবাব দিই না। 

বুধবার বিকেলে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে পৌঁছে গেলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সঙ্গে স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার। তাঁদের আপ্য়ায়ণে গেটে অপেক্ষায় ছিলেন বিদ্য়ুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। দিলীপ ঘোষকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন অরূপ বিশ্বাস। প্রণাম করে ঘুরে দেখেন মন্দির। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সস্ত্রীক দিলীপ ঘোষ।দিলীপ ঘোষের দিঘায় জগন্নাথ দর্শনের পর কার্যত ঝড় উঠেছে বিজেপির অন্দরে। বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সোশাল মিডিয়ায় লেখেন, "একজন ত্যাগী থেকে কীভাবে ভোগী হতে হয় তার আদর্শ নিদর্শন আপনি দিলীপ বাবু। বাংলার বিজেপির লজ্জা আপনি।''