Jhargram: নতুন বছরে শীত থাকতে থাকতে অনেকেই বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। হাতে তিন থেকে চারদিন সময় থাকলে ভালভাবে ঘুরে আসতে পারবেন ঝাড়গ্রাম (Jhargram) থেকে। পশ্চিম মেদিনীপুর (Paschim Medinipur) জেলার পশ্চিম ভাগে অবস্থিত ঝাড়গ্রাম জেলায় রয়েছে মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ হল বেলপাহাড়ি। এছাড়াও সুবর্ণরেখা নদী এবং কাঁকড়াঝোড়। প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য ঝাড়গ্রাম আদর্শ স্থান। শাল, টিক, পিয়াল, মহুলের জঙ্গলে দেখা মিলবে বুনো হাতি, হরিণ এবং বিভিন্ন পাখিদের। যাঁরা জঙ্গল ভালবাসেন, তাঁদের জন্য ঝাড়গ্রাম কিন্তু দারুণ পর্যটক কেন্দ্র হতে পারে। এখানে রয়েছে প্রচুর প্রাচীন মন্দির, রাজবাড়ি। এর পাশাপাশি সংস্কৃতির দিক থেকেও ঝাড়গ্রাম সবসময় পর্যটকদের নজর কেড়ে নেয়। ঝাড়গ্রামের লোকসঙ্গীত, সাঁওতাল নাচ- এইসবই আপনার পর্যটনে অন্য মাত্রা যোগ করবে।
ঝাড়গ্রামে কোথায় কোথায় ঘুরবেন
ডিয়ার পার্ক- শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে এই ডিয়ার পার্ক। আপনি যদি সঙ্গে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে যান, তাহলে অবশ্যই একবার ঘুরে আসবেন ডিয়ার পার্ক। ভাল্লুক, কালো খরগোশ, কুমির এবং বিভিন্ন প্রজাতির বাঁদর রয়েছে এখানে। এছাড়াও রয়েছে ঝাড়গ্রাম Mini Zoo। এখানে প্রায় ১০০০ হরিণ রয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে অন্যান্য বন্যপ্রাণও। জঙ্গলের মধ্যেই এই চিড়িয়াখান তৈরি হয়েছে।
চিল্কিগড় প্রাসাদ- ঝাড়গ্রাম থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে চিল্কিগড় প্রাসাদ। এখানে এলে দুর্গা মন্দির দর্শন করতে ভুলবেন না। বর্তমানে চিল্কিগড় প্রাসাদ ফাঁকাই থাকে। তবে এখানকার মূল আকর্ষণ দু'টি প্রাচীন মন্দির। দুর্গা মন্দিরের চারপাশে যে ঘন জঙ্গল রয়েছে সেখানে বিভিন্ন ধরনের ভেষজ গাছ রয়েছে। এছাড়াও রাজহাঁস, বিভিন্ন প্রজাতির বাঁদর, ময়ূর, বিভিন্ন ধরনের প্রজাপতি ও আরও অনেক কিছুর সহাবস্থান। এখানে জঙ্গল এতটাই ঘন যে গরমের সময়েও এই এলাকা শীতল থাকে। এছাড়াও ছায়ায় ঘেরা থাকে এই জঙ্গল। ঝাড়গ্রামের কনক দুর্গার মন্দির পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। দুর্গাপুজোর সময় মহা সমারোহে এখানে উৎসব পালিত হয়।
কুরুম্বেরা দুর্গ- কেশিয়ারি গ্রাম থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে রয়েছে কুরুম্বেরা দূর্গ। এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটক কেন্দ্র। এখানেও রয়েছে মন্দির এবং ছোট ছোট কোয়ার্টার যেগুলো Archaeological Survey of India- এর আওতাধীন। কথিত রয়েছে রাম-সীতা যখন বনবাসে এসেছিলেন তখন একরাতের মধ্যেই নাকি তৈরি হয়েছিল এই দুর্গ।
কেন্দুয়া- পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা হয় এই কেন্দুয়াতে। বেশ কয়েকমাস পরিযায়ী পাখিরা থাকে এখানে। ডিম পাড়ে, তারপর আবার ফিরে যায়। মূলত অগস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দুয়াতে আসে পরিযায়ী পাখিরা। চিল্কিগড় এবং ঝাড়গ্রামের মাঝামাঝি অবস্থান এই এলাকার।
বরাসুলি বাঁধ- ঝাড়গ্রাম পৌঁছনোর আগেই পাবেন এই ড্যাম। এখান দিয়ে যাতায়াত করে হাতির দল। ভাগ্য ভাল থাকলে সূর্যাস্তের সময় গজরাজের দর্শন হতেই পারে। এছাড়াও পর্যটকদের জন্য রয়েছে মাছ ধরার বন্দোবস্ত। কাছেই জঙ্গলের মধ্যে ছোট্ট ট্রেকের সুযোগও পাবেন পর্যটকরা।