পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: গোল্ডেন আওয়ারে (golder hour) মিলল চিকিৎসা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত তরুণীকে রাস্তাতেই CPR দিলেন দুই চিকিৎসক কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় ও অশোক বর্মা। প্রাণে বাঁচলেন মা উড়ালপুলে (Maa Flyover) সহকর্মীর বাইক থেকে ছিটকে পড়া তরুণী।
কী ঘটেছিল?
কথায় বলে, চিকিৎসকরা হলেন ভগবানের রূপ! সেটাই যেন ফের প্রমাণিত হল সোমবার! দুই চিকিৎসকের তৎপরতায় প্রাণ ফিরে পেলেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক তরুণী। রাস্তায় শুইয়েই দেওয়া হল CPR বা কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন। গোল্ডেন আওয়ারে চিকিৎসা মেলায় রক্ষা পেল প্রাণ! প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ, মা উড়ালপুল দিয়ে সহকর্মীর সঙ্গে বাইকে যাচ্ছিলেন এক তরুণী। বাইকটি দুর্ঘটনার কবলে পড়লে রাস্তায় ছিটকে পড়েন তরুণী। আর ঠিক সেইসময় সল্টলেকের দিকে যাচ্ছিলেন চিকিৎসক কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়। তিনি ছুটে গিয়ে দেখেন, তরুণীর কোনও সংজ্ঞা নেই! আর দেরি করেননি তিনি। মা উড়ালপুলের ওপরে, তরুণীকে রাস্তায় শুইয়ে কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন দিতে শুরু করেন। সেইসময় মা উড়ালপুল দিয়ে সল্টলেকের দিকে যাচ্ছিলেন অশোক বর্মা নামে আরও এক চিকিৎসক! তিনিও চলে আসেন ঘটনাস্থলে। বস্তুত দু-জনই একে অপরকে চিনতেন না। কিন্তু দুর্ঘটনাগ্রস্ত একজনকে প্রাণ ফিরিয়ে দিতে কসুর করেননি কেউ। বেশ কিছুক্ষণ CPR দেওয়ার পর অবশেষে হাত নড়ে ওঠে বছর তিরিশের তরুণীর। কিন্তু তখনও জীবনযুদ্ধ শেষ হয়নি। এরপর নিজেদের গাড়িতে এই তরুণী ও তাঁর সহকর্মীকে বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। প্রথমে সল্টলেক এবং তারপর পার্ক সার্কাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে তরুণীকে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাণে বেঁচে গেলেও, তাঁর মস্তিষ্কে চোট রয়েছে। আপাতত চিকিৎসা চলছে। কিন্তু যে ভাবে মা উড়ালপুলের উপরই সিপিআর দিয়ে প্রাণে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়, তাতে দুই চিকিৎসককেই ধন্যবাদ জানিয়েছে তরুণীর পরিবার।
সিপিআরের গুরুত্ব...
সঙ্গীতশিল্পী কে কে-র মৃত্যুর পরও আলোচনায় উঠে এসেছিল কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশনের কথা। বিপদের সময় সাক্ষাৎ যেন দেবদূত হতে পারে এটি। মুহূর্তের এই পদক্ষেপই, মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারে যে কাউকে। SSKM হাসপাতাল সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের মতে, হোটেলেই যদি গায়ক কে কে’কে CPR দেওয়া হত, তাহলে সম্ভবত প্রাণে বেঁচে যেতেন তিনি। ঠিক যেমনটা হয়েছিল প্রায় দু’দশক আগে জাকার্তার আশিয়ান ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপের হাইভোল্টেজ ম্যাচে। সতীর্থ ডগলাস দ্য সিলভার CPR’এ মৃত্যুর দোরগোড়া থেকে ফিরে এসেছিলেন দেবজিৎ ঘোষ। কার্যত পুনর্জন্ম হয়েছিল লাল হলুদ ডিফেন্ডারের। প্রাক্তন ফুটবলার দেবজিৎ ঘোষ বলেন, "একবার আমার বন্ধুর জন্য নিজে বেঁচে ফিরেছি, একবার কোচ ছিলাম তখন একজনকে বাঁচিয়েছিলাম।"
এদিনও কার্যত এক ঘটনা ঘটল। দুই চিকিৎসকের তৎপরতায় জীবনে ফিরলেন তরুণী।