কলকাতা: DRDO-র ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের মৎস্যজীবীদের জন্য জারি হল নিষেধাজ্ঞা। আজ থেকে শুক্রবার পর্যন্ত, টানা ৩ দিন দুই জেলার মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য মৎস্য দফতর। এই তিন দিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীন DRDO-র তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের জুনপুটে আকাশপথে ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া হওয়ার কথা। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় এ রাজ্যের মৎস্যজীবীদের ওড়িশা উপকূলেও মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করেছে রাজ্য সরকার। (DRDO Missile Exercise)


আজ থেকেই DRDO-র তরফে জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া হওয়ার কথা। ওড়িশা উপকূলে যেতেও নিষেধাজ্ঞা মৎস্য দফতরের। নিষেধাজ্ঞার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য মৎস্য দফতর। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র মহড়ার জন্য ফের ২৪-২৬ জুলাই বন্ধ থাকবে সমুদ্রে মাছ ধরা। ইলিশ ধরার ভরা মরশুমে এই নিষেধাজ্ঞায় মৎস্যজীবীরা আর্থিক লোকসানের মুখে পড়বেন বলে মনে করছে মৎস্যজীবী সংগঠন। (DRDO Missile Exercise Row)


DRDO-র এই ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। কাঁথির তৃণমূল নেতা আমিন সোহেলের বিরুদ্ধে জুনপুটে DRDO-র প্রকল্পের জমি দখল করে তোলাবাজির অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতা শঙকুদেব পাণ্ডা। তাঁর বক্তব্য, "প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের জমি অধিগ্রহণ করা হয়ছে। DRDO-র বিজ্ঞানীদের উপর অত্যাচার চলছে, যাতে তাঁরা ওই প্রকল্প না করতে পারেন। তাঁদের তাড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তোলা দেওয়া হলে তবেই প্রকল্প করতে দেওয়া হবে।" রাজ্য সরকার মহড়ার অনুমতি না দেওয়ায় ভারতের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক এবং এর পিছনে বিদেশি শক্তির হাত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত বলেও মন্তব্য করেন শঙ্কুদেব। 


আরও পড়ুন: West Bengal BJP: অহঙ্কারই ডোবাল? টাকা-পয়সা নয়ছয়ের অভিযোগও, নির্বাচনী ভরাডুবিতে দলের অন্দরেই প্রশ্নের মুখে BJP নেতৃত্ব


যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আমিন। ওই জায়গায় DRDO-র ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ হলে বহু মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে সংশয় তৈরি হবে বলে দাবি করেছেন তিনি। আমিনের বক্তব্য, "শঙ্কুদেব আমাদের আন্দোলনে রাজনীতির রং লাগানোর চেষ্টা করছেন। যেখান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে, সেখান থেকে জনবসতির দূরত্ব ৪০-৫০ মিটারের মধ্যে। মানুষের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িয়ে। জুনপুর মৎস্যজীবী খটি আছে ওখানে। মানুষের জীবন-জীবিকার কী হবে, জানতে চেয়েছি আমরা।" আমিন জানান, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর যখন এ নিয়ে আন্দোলনে নামেন তাঁরা, সেই সময় স্থানীয় বিজেপি প্রধানের সমর্থনও মেলে। DRDO যখন জমি অধিগ্রহণ করে ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প আসে, সেই সময়ই প্রশ্ন ওঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের কিছু জানানোও হয়নি বলে দাবি করেন আমিন।