সনৎ ঝা, শিলিগুড়ি: সাত দিন ধরে পানীয় জল সঙ্কটে জেরবার শিলিগুড়ি(Siliguri)। অভিযোগ,কোথাও জলসরবরাহ একেবারেই বন্ধ। কোথাও জল দেওয়া হচ্ছে অনিয়মিত এবং খুব অল্প। পানীয় জলের (Drinking Water) এই সঙ্কটকে কেন্দ্র করে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত শহরে তীব্র হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।


কল আছে, কিন্তু জল নেই। টানা এক সপ্তাহ ধরে জল সঙ্কট চলছে শিলিগুড়িতে। পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩০টি ওয়ার্ডে জল সঙ্কটের প্রভাব পড়েছে। অভিযোগ, কোথাও পানীয় জল একেবারেই মিলছে না। কোথাও আবার জল অনিয়মিত আসছে এবং পরিমাণেও কম।


পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে মহানন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শিলিগুড়ি, কলকাতা ও আসানসোলের পরেই রাজ্যের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। এখনও পর্যন্ত শিলিগুড়িকে পানীয় জল জুগিয়ে আসছে ১৯৯৪ সালে বাম আমলে তৈরি হওয়া মহানন্দা জল প্রকল্প। ওই প্রকল্পে মহানন্দা নদীর জল ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে পরিশোধন করে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। পরিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করে শিলিগুড়ি কর্পোরেশন। পানীয় জলের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মাথায় রেখে, আলাদা করে গজলডোবা জল প্রকল্প ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ঠিক হয়, গজলডোবা থেকে তিস্তার জল ট্রিটমেন্ট প্লান্ট হয়ে শিলিগুড়িতে সরবরাহ করা হবে।  অভিযোগ, ৬০০ কোটি টাকার পানীয় জল প্রকল্পের সেই কাজ তিমিরেই পড়ে রয়েছে।এই পরিস্থিতিতে শিলিগুড়িতে জল সঙ্কট তীব্র হতেই সরব হয়েছে বিরোধী শিবির।


আরও পড়ুন: চন্দননগর কাঁটাপুকুরে বিধ্বংসী আগুন লেগে পুড়ে ছাই দুটি ঘর


শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “আমার সময়ে জল সরবরাহ নিয়ে সামান্য সমস্যা হওয়ায় কী হেনস্থাটাই না করা হয়েছিল। এখন সারা সপ্তাহ জুড়ে জল নেই। এই প্রশাসক বোর্ডের অপদার্থতার কারণে শহর আজ নির্জলা। আমি যতদিন ছিলাম গজলডোবা করতেই দেয়নি। এখনও তো ওদেরই সরকার। ওদেরেই প্রশাসক। জলপ্রকল্পটা অন্তত করুক। রাজনীতির জন্য রাজনীতি করে আমরা বাধা দেব না।’’


শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, “এখনকার প্রশাসকের অশোক ভট্টাচার্যর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। ২০১৫ সালে রাস্তার কাজের জন্য পানীয় জল তিনদিন বন্ধ থাকায় রাস্তায় অশোক ভট্টাচার্যকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘেরাও করে রেখেছিল তৃণমূল। এখন সাতদিন জল নেই। শহরকে যখন আজ বিপদের মধ্যে ফেলা হয়েছে তারা কী ক্ষমা চাইবে।’’ শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের পুর প্রশাসক তথা তৃণমূল নেতা গৌতম দেব বলেন, আগামীকালের মধ্যে জল সমস্যা প্রাথমিক ভাবে মিটে যাবে। কিন্তু পুকুরগুলোতে এত পলি জমেছে, তা না সরানো পর্যন্ত জলের পরিমাণ বাড়ানো যাচ্ছে না। জনস্বাস্থ্য দফতরে ডিপিআর পাঠানো হয়েছে। সেই কাজ শেষ হলে মিটে যাবে।


আরও পড়ুন: অসম্পূর্ণ রেজাল্ট, মেলেনি মার্কশিট, হাওড়ার লালবাবা কলেজের পড়ুয়াদের প্রিন্সিপালকে ঘিরে বিক্ষোভ