হংসরাজ সিংহ, আড়রা (পুরুলিয়া) : বংশে একটি কন্যাসন্তান আসুক। এমনই সাধ ছিল রাজারাম মিশ্রের। ঠিক করেছিলেন, বারাণসী যাবেন। অন্নপূর্ণা মন্দিরে। তোড়জোড় যখন চলছে, হঠাৎ স্বপ্নে দেখেন ফুটফুটে একটি মেয়েকে। লালপাড় শাড়ি পরা। বলছে, গ্রামে দুর্গাপুজো করতে। পুরুলিয়া জেলার আড়রা গ্রামের মিশ্র পরিবারের তিনশো বছরেরও বেশি পুরনো দুর্গাপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এমনই জনশ্রুতি। এখনও সেখানে পুজোর সমস্ত দায়িত্ব কাঁধে নেন বাড়ির মেয়েরাই।


আরও পড়ুন ; ৭৯ বছরে এবার পা দিল বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির পুজো


পুরুলিয়া জেলার রেলশহর আদ্রার পাশেই আড়রা গ্রাম। বাড়ির বর্তমান প্রজন্মের সদস্য অসীম মিশ্র বলেন, "৩১৭ বছর আগে শুরু হয়েছিল এই পুজো। বংশের পূর্বসূরীরা এই পুজো শুরু করেন। কারণ, সেই সময় বংশে কোনও কন্যাসন্তান ছিল না। দেবীর স্বপ্নাদেশের পর কাশীপুর রাজার অনুমতিতে প্রথমে অস্ত্র পুজো, তার পর ঘট স্থাপন করা হয়। এর পর আরম্ভ হয় মূর্তি পূজো। প্রায় ১০০ বছর ধরে চলছে মূর্তি পূজো। এর পর সেই সময় বংশে কন্যাসন্তান প্রাপ্তি হয়। বর্তমানে তাঁর ৬ বোন এবং ৭ কন্যাসন্তান।’’


আরও পড়ুন ; 'দুর্গাকে সন্ধ্যা দেখাতে গিয়ে ফেরেননি কুমারী', কেন মাটির মূর্তি নয় খরুনের রায়পরিবারের পুজোয় ?


তিনি জানান, বংশ-পরম্পরা অনুযায়ী এই পুজো চলে আসছে । বাড়ির মহিলারা পুজোয় বিশেষভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি আরও জানান, দুর্গা দেবীকে তাঁরা বেটি বলে পুজো করেন।


পরিবারের সদস্য সন্ধ্যা মিশ্র জানান, বহু আগে থেকেই দুর্গা পুজো হয়ে আসছে এই পরিবারে। আমি ৪০ বছর এসেছি। পুজো একই রকম চলে আসছে। পুজোর ভোগ আচার-অনুষ্ঠান আমরাই করে থাকি। পুজোর এই পাঁচটা দিন বাড়ির মহিলাদের বাইরে বেরনোর অবকাশ থাকে না। তিনি আরও জানান, শুধুমাত্র পুজোর পাঁচটা দিন নয়, সারা বছরই মন্দিরে পুজো অর্চনা করে থাকেন তাঁরা।