সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া : বহু বছর আগে পুরুলিয়া শহরের এক সর্বজনীন মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে নিচু জাতি বলে অপমানিত হতে হয় ধীবর সম্প্রদায়ের মানুষদের। সেই অপমানে তাঁরা আর কখনও ওই মন্দিরে যাননি। পুরুলিয়ার ধীবররা নিজেরাই নিজেদের জমি জায়গা মায়ের নামে দান করেন। মাছ ধরে যে পারিশ্রমিক পেতেন তাঁরা, সেখান থেকে মন্দির নির্মাণকল্পে অর্থ দান করতেন ধীবররা। নিজেরাই সিমেন্ট, বালি, ইঁট নিয়ে এসে মন্দির নির্মাণের কাজে হাত লাগাতেন। এভাবেই তিলে তিলে গড়ে তোলেন পুরুলিয়ার সর্বসেরা এবং দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম স্থায়ী দুর্গা মন্দির। এবছর ৯৫তম বর্ষে পদার্পন করতে চলেছে তাঁদের দুর্গাপুজো।


আরও পড়ুন - Durga Puja Special 2021 : মহাদেবের বাম ঊরুতে অধিষ্ঠিতা দূর্গা, বড়শুলের 'দে' বাড়িতে পূজিত হরগৌরী


দক্ষিণবঙ্গের যতগুলি স্তায়ী দুর্গা মন্দির রয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম এবং জেলার সর্বসেরা স্থায়ী দুর্গা মন্দির পুরুলিয়া শহরের জেলে পাড়া ধীবর সমিতি দুর্গা মন্দির। প্রতিবছর পুজোর দিনগুলিতে এই মন্দিরে পূণ্যার্থীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো থাকে। পুজোও হয় সমস্ত রীতিনীতি মেনে। ধীবর সমিতি দুর্গা মন্দিরের দুর্গাপুজোর অন্যতম আকর্ষণ আতসবাজির প্রতিযোগিতা। কিন্তু, চলতি বছর করোনা অতিমারির কথা মাথায় রেখে মানুষদের সংক্রমণের আশঙ্কায় হবে না আতসবাজী প্রতিযোগিতা।


আরও পড়ুন - Durga Puja 2021: ৯১ বছরে কুমোরটুলি সর্বজনীনে মণ্ডপজুড়ে থাকছে শুধুই সাদা আর কালো রং | Bangla News


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর দুর্গাপুজোর এক মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। পুজোর দিনগুলিতে জেলা বা রাজ্য ছাড়িয়ে প্রতিবেশি রাজ্য ঝাড়খন্ড থেকেও হাজার হাজার দর্শনার্থী আসেন এই মন্দিরে। পুজোর সময় মেলা বসে। আয়োজিত হয় নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। তবে, দশমীতে নয়, এখানকার দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন হয় একাদশীতে। দুর্গা মন্দিরের পাশে রাসমেলার বিশালাকার ময়দানে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় আতসবাজীর প্রতিযোগিতা। কিন্তু এই বছর কোভিড পরিস্থিতি থাকায় সেই আতসবাজীর প্রতিযোগিতা বন্ধ রেখেছে পুজো কমিটি। বর্তমান সময় অনুযায়ীই করোনা আবহ চলার কারণে মন্দির ও প্রতিমা দর্শনে একাধিক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে পুজো কমিটির পক্ষ থেকে। নির্দেশিকাগুলির মধ্যে মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবহার এবং মন্দর প্রাঙ্গনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক দর্শনার্থীদের জন্য।