পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: ৩০০ বছরের বেশি প্রাচীন দুর্গা পুজো (Durga Puja)। আজও প্রাচীন নিয়ম মেনেই কোষ্টিয়া সিট জমিদার বাড়ির প্রাচীন দুর্গাদালানে পুজিতা হন দেবী দুর্গা। বাঁকুড়ার (Bankura) দু'নম্বর ব্লকের কোষ্টিয়া গ্রামে সার্থক সিট জমিদারি। বর্ধমান রাজার সৌজন্যে এই শীট জমিদারদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়ে।



জমিদার বাড়িতে বড়-বড় দালান, জমিদার বাড়ির মধ্যে দুর্গা দালান এই পরিবারের ঐতিহ্য। এখানকার বিষ্ণু মন্দির সিট জমিদার বাড়ির আভিজাত্যের চিহ্ন। আজ থেকে ৩০০ বছর আগে এই বাড়িতে দেবী দুর্গার পুজো শুরু হয়।  বিধি নিয়ম মেনেই নিষ্ঠার সঙ্গে আজও সিট জমিদার বাড়িতে পুজিতা হন দেবী দুর্গা। সিট জমিদার বাড়ির প্রাণের পুজোর টানে পরিবারের সব সদস্য উপস্থিত হন পুজোতে। গ্রামের মানুষ জমিদার বাড়ির এই পুজোতে মেতে উঠেন। জৌলুস কমলেও জমিদার বাড়ির আভিজাত্যের পুজোতে রয়েছে নিষ্ঠা ও ভক্তি। শুধু আশেপাশের গ্রাম নয় পার্শ্ববর্তী জেলা ও ভিন রাজ্য মানুষ ভিড় জমায় জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো দেখতে।


আরও পড়ুন :


৮৬তম বছরে নতুন কী দেওয়া যায় ? চরম ব্যস্ততা চোরবাগান সর্বজনীনের পুজোমণ্ডপে


জমিদার বাড়ির অন্যতম সদস্য গোপাল পাল জানালেন, 'আগে পুজোর রমরমা আরও বেশি ছিল। ছিল ধন-দৌলতও।  সরকার জমিদার বাড়ির ধন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নেওয়ার পর পুজোর জাঁকজমক তো অনেকটাই কমে গিয়েছে।  পুজোর শুরু জমিদার সার্থক সিটের হাত ধরে। তখন সার্থক সিটের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না । জঙ্গলে গরু মোষ চড়াতে গিয়ে মা দুর্গার স্বপ্নাদেশ পান তিনি।  জানা যায়, মা দুর্গার পুজো শুরু করার পরই তাঁর সুদিন ফেরে। ছোট চালা ঘর থেকে আস্তে আস্তে ঘরবাড়ি সব হয়। আগের বহু সম্পত্তি সরকারের অধীনে চলে যাওয়ার পর এখনও ৫০ থেকে ৬০ বিঘা জমি-জায়গা আছে জমিদারি বাড়ির। আছে বড় পুকুরও। কুমড়ো ও আখ বলির রীতি আছে এখানে।'


জমিদার বাড়ির আরেক সদস্য বীরেন পাল জানান, 'জমি-জায়গা, থেকে যে আয় হয়, তা থেকেই  আমাদের দুর্গাপুজো হয় । পুজোয় মানা হচ্ছে কড়়া কোভিড বিধি।  পাশাপাশি গ্রামের মানুষও জড়ো হন জমিদার বাড়িতে।'

শুধু জমিদার বাড়ির সদস্যরাই নন, গ্রামবাসীরাও তাকিয়ে পুজোর দিনগুলির দিকে।