কলকাতা : উৎসব শেষে উমাকে বিদায় দেওয়ার পালা। মন খারাপের রেশ মেখেই কলকাতা থেকে জেলায় জেলায় চলল সিঁদুর খেলে, ধুনুচি নাচে, মিষ্টিমুখে মাকে বিদায় দেওয়া। মন খারাপের মধ্যেই বিজয়ার (Bijaya Dashami) শুভেচ্ছা বিনিময়, প্রণাম, কোলাকুলি, একে অন্যকে মিষ্টিমুখ করানোর পালাও চলল।
পূর্ব মেদিনীপুর- মহিষাদলের মহিলা পরিচালিত অদ্রিজা ক্লাবের পুজোয় সিঁদুর খেলায় মাতেন বিভিন্ন বয়সের মহিলারা। হলদিয়া টাউনশিপে ল্যান্ডমার্ক, শঙ্খিনী ও রিস্তা, এই তিনটি আবাসন মিলে একটিই পুজো। দশমীর সকালে মাকে বরণ করে, ঢাকের তালে নাচের ছন্দে সিঁদুর খেলায় মাতেন মহিলারা।
বর্ধমান-বর্ধমান শহরে আনন্দপল্লি একান্নবর্তী দুর্গাপুজোয় রঙিন বিজয়া দশমী। দেবীবরণ, সিঁদুর খেলার পাশাপাশি, মহিলারা নাচলেন ঢাকের তালে।
দুর্গাপুর- দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের এডিসন রোডে প্রতিমা বরণের পর শুরু হয় সিঁদুর খেলা। পাশাপাশি দুর্গাপুরের সগরভাঙার চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে দশমী পুজোর পরেই সিঁদুর খেলা শুরু হয়। উমাকে বিদায় জানানোর আগে একে অন্যকে সিঁদুরে রাঙিয়ে দেন মহিলারা। এদিকে, কুলটির নিয়ামতপুর অন্নপূর্ণা মন্দিরে সিঁদুর খেলার পাশাপাশি ধুনুচি নাচে অংশ নেন মহিলারা।
পাশাপাশি রায়গঞ্জের বিভিন্ন মণ্ডপে চলে সিঁদুর খেলা। পুরুলিয়ার মণ্ডপে মণ্ডপে মাকে সিঁদুর পরিয়ে ও মিষ্টি মুখ করিয়ে চলছে বরণ। ঢাকের বোলে উমা বিদায়ের সুর। দশমীর সকালে সিউড়ির বিভিন্ন ক্লাবে চলছে সিঁদুর খেলা। কীর্ণাহারের মুক্তাঙ্গন সর্বজনীনের পুজো মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতেছেন পাড়ার মহিলারা। বাঁকুড়ায় সিঁদুর খেলার পর্ব শেষ করে এবার ঘট বিসর্জনের পালা। গন্ধেশ্বরী নদী এবং দ্বারকেশ্বরে বনেদি বাড়ি ও বারোয়ারি পুজোর ঘট বিসর্জন শুরু হয়েছে। এর আগে বাঁকুড়া শহরে পাঠকপাড়া দুর্গাপুজোর মণ্ডপে সকাল থেকে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন মহিলারা।
আসছে বছর আবার হবে
বাপের বাড়ি থেকে আবার কৈলাসে পাড়ি উমার। ঢাকের বোলে বিসর্জনের সুর। আরও একটা বছরের প্রতীক্ষা। প্রতিমা নিরঞ্জনের পরেই শুরু হয় বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়। সঙ্গে কোলাকুলি, মিষ্টিমুখ মাস্ট। রকমারি মিষ্টিতে যেন উৎসব শেষের কষা স্বাদ ঢেকে নিয়ে নতুন লড়াই শুরুর চেষ্টা।
বেজে গিয়েছে বিসর্জনের বাজনা ৷ ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়ি থেকে কৈলাসে পাড়ি উমার। আনন্দে উচ্ছ্বাসের মাঝেই মিশেছে বিষণ্ণতার সুর৷ মণ্ডপে মণ্ডপে দেবী-বরণের পাশাপাশি সিঁদুর খেলা। এরপর মা-কে বিদায় জানানোর পালা। সিঁদুর খেলে, মিষ্টিমুখে প্রতিমা নিরঞ্জনের পর কোলাকুলি, শুভেচ্ছা বিনিময়, মিষ্টিমুখ৷ বাঙালির চিরাচরিত রীতি। হাসি মুখে মাকে বিদায় জানিয়ে আরও একটা বছরের অপেক্ষা৷ এখন শুধু দু’চোখ ভরে মাকে দেখে নেওয়া আর ঢাকের তালে মনে মনে বলা, আসছে বছর আবার এসো মা৷
মিষ্টির বাহার
ট্র্যাডিশনাল রসগোল্লা বা কড়া পাকের সন্দেশই হোক আর হাল ফ্যাশনের চকোলেট সন্দেশ হোক। দশমীর সকাল থেকে দোকানে দোকানে তাই মিষ্টি কেনার ভিড়। বেজায় ব্যস্ত মিষ্টির দোকানের কর্মচারীরাও। আনন্দ উচ্ছ্বাসের মাঝেই বিষণ্ণতার সুর। উৎসব শেষ। থেকে যাক মিষ্টিমুখের রেশ।
আরও পড়ুন- রাজনীতির পরত সরিয়ে সিঁদুর খেলায় মাতলেন অগ্নিমিত্রা পাল, অংশ নিলেন ধুনুচি নাচে