Durga Puja 2023 : প্রহর গোনার পালা শুরু, পুজোর বাকি ১০০ দিন

West Bengal News : রাজ্যে সদ্য ভোট শেষ হল। গ্রামে শান্তি ফেরার প্রতীক্ষায় লক্ষ লক্ষ মানুষ। গ্রাম শান্ত হলে তবেই তো মেয়ে-বউদের রেখে শহরে আসবে তারা। কেউ বাঁশ বাঁধবে তো কেউ ঢাক বাজাবে।

Continues below advertisement

সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা : সেই কোন ছোটবেলায় শেখা বর্ষা (Monsoon) গেলে শরৎ আসে। আর মন জানে শরৎ বয়ে আনে পুজোর গন্ধ। ক্যালেন্ডার হাতে পেলে আগেই দেখে নেওয়া দুর্গা পুজো (Durga Puja 2023) কবে পড়ল। তারপর যার যার গতানুগতিক ব্যস্ততায় সময় কাটতে থাকে। কিন্তু মনের মাঝে কোথাও একটা গাঁথা হয়ে থাকে দিনটা। মাঝে মাঝে ক্যালেন্ডারে চোখ পড়লে দেখে নিতে ইচ্ছে করে আর কটা দিন বাকি।আলোচনা চলে পুজোর ছুটিতে এবার কোথায় বেড়াতে যাওয়া হবে ? ছোট মেয়েটা বায়না ধরেছে এবার আর দিঘা-পুরী নয় পাহাড় দেখতে যাবে। ক্যালেন্ডারে তারিখ গুণে ট্রেনের টিকিট না কাটলে সেই ওয়েটিং-এ পড়ে থাকা। তারপর থেকে মাঝে মাঝে নেটে দেখে নেয়া কনফার্ম হল কি না। 
পুজো কমিটিদের কাউন্টডাউন (Puja Countdown) অবশ্য শুরু হয়ে যায় দুগ্গা ঠাকুর জলে পড়লেই। মানে দশমীর পরের দিন থেকেই। এবার কে কোন শিল্পীকে ঘরে তুলতে পারল তা নিয়ে দড়ি টানাটানি থাকেই। পরের বার সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে হবে।

Continues below advertisement

ওদিকে কুমোরপাড়ায় সরস্বতী পুজো কাটলেই দুগ্গা গড়ার কাজ শুরু হয়ে যায়। পয়লা বৈশাখ, অক্ষয় তৃতীয়া আর রথে কুমোরের ঘরে গিয়ে বায়না দেয়ার রীতি দীর্ঘদিনের। ক'দিন পরেই পন্ডিতমশাইরা ঠাকুর দালানে বসে পড়বেন নব্যদের পৌরহিত্যের পাঠ দিতে। কার পরে কী মন্ত্র, তার সঙ্গে কী করতে হয় সব খুঁটিনাটি শেখানো হবে। ওদিকে ফুল চাষীরা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকবে, শেষ বর্ষায় যেন বন্যা না হয়। তাহলে পুজোর সময় খাল বিল ভরে  ভরে পদ্ম ফুটবে। ফুলের জোগাড় সহজ হবে।

হালে পাড়ায় পাড়ায় খুঁটি পুজোর ফ্যাশন শুরু হয়েছে। যেকোনো একটা ছুটির ছুতোয় কয়েকটা ঢাক বাজিয়ে খুঁটিতে মালা পরিয়ে, সবাই মিলে সেজেগুজে ছবি তোলা, আর খাওয়া। যাঁরা একটু লেখালিখি করেন তাঁদের কাছেও অর্ডার পোঁছে গেছে- ‘এবারে কিন্তু ছোট গল্প নয় উপন্যাস চাই’ বা ‘আমাদের একটা কবিতা দিতেই হবে’ গোছের নানা আবদার। ওদিকে প্রেস থেকে তাগাদা আসছে প্রুফ ছাড়তে হবে।

গায়কদের আর পুজোর অ্যালবাম করতে হয় না। কারণ বিক্রি নেই। এখন সিঙ্গলস্ এর যুগ। ইতিমধ্যেই অনেকের পুজোর অনুষ্ঠানের বুকিং হয়ে গেছে। যাঁরা বিদেশে বা ভিন্ রাজ্যে ডাক পেলেন তাঁরা মুখ ব্যাজার করে বলেন- এখানে তো পুজো দেখাই হয় না। বাকিরা রাজ্যের নানা প্রান্ত চষে ফেলবেন পুজোয় একটু বাড়তি রোজগারের আশায়।

বড় ব্র্যান্ডেড শোরুমে এখনও মনসুন অফার চলছে। তাদেরও প্ল্যান সারা। কী কী অফার দেওয়া হবে। ব্যয় সংকোচ চলছে তাই গতবার পুজোর আগে এক্সট্রা যে ছেলে মেয়েদের কাজ জুটে ছিল এবার একটু কমের মধ্যেই সারতে হবে। গেটে শোলার কদম ফুল আর দুদিকে থার্মোকলের ঢাকি মাস্ট। ছোট দোকানদাররা পুজোর আগে কীভাবে পুঁজি জোগাড় করবে তাই ভেবে পাচ্ছে না। করোনার সময় থেকে ব্যবসায় মন্দা। তবুও ভাবছে এবারটা ধারধোর করে শেষ চেষ্টা করা যাক, যদি কিছু লাভ হয়।

ডিএ আন্দোলনে বসে রয়েছেন একদল। তাদের দেখে প্রাইভেট ফার্মের কনিষ্ঠ কেরানি মুচকি হাসছিলেন এতদিন। মনে ক্ষীণ আশা, করোনার পর থেকে ভালো বোনাস হয়নি- এবারটা একটু দেখো মা। শহরের নানা প্রান্তে চাকরির আশায় বসে রয়েছে শত শত তরুণ তরুণী। সবারই আশা চাকরির জট কাটলে এবার হয়ত পুজোটা একটু ভালো ভাবে কাটাতে পারবে।

রাজ্যে সদ্য ভোট শেষ হল। গ্রামে শান্তি ফেরার প্রতীক্ষায় লক্ষ লক্ষ মানুষ। গ্রাম শান্ত হলে তবেই তো মেয়ে-বউদের রেখে শহরে আসবে তারা। কেউ বাঁশ বাঁধবে তো কেউ ঢাক বাজাবে। ছোট্ট ছেলেটা সঙ্গে কাঁসি বাজাবে। ফেরার সময় একটা নতুন জামা গায়ে ঘরে ফিরবে। বউয়ের হাতে তুলে দেবে পুজোর একটা শাড়ি আর কিছু টাকা। মায়ের প্রসাদে মন ভরবে আট থেকে আশির। আজ থেকে পুজোর বাকি আর মাত্র ১০০ দিন।

আরও পড়ুন- এবার ঘোড়ায় আগমন দেবী দুর্গার, দেখে নিন বাঙালির প্রাণের উৎসবের নির্ঘণ্ট !

আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন

https://t.me/abpanandaofficial

Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola