মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব, দুর্গাপুজো (Durga Puja 2025)। এই কয়টি দিন বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষেরা নিজেদের পরিসর, দৈনক জীবনযাপনের বাইরে গিয়ে আনন্দে ভাসেন। মুছে যায় বিভেদ। এমন ছবিই দেখা গেল দুর্গাপুরের শঙ্করপুর সর্বজনীন দুর্গাপুজোর মন্ডপে। 

Continues below advertisement

সোমবার, সপ্তমীর রাতে এই মণ্ডপে সপরিবারে হাজির হয়েছিলেন সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan)। দীঘার জগন্নাথ ধামের আদলে তৈরী হয়েছে দুর্গাপুরের শঙ্করপুর সর্বজনীন দুর্গাপুজোর মন্ডপ। দীঘার এই মন্দির নিয়ে না না সময়ে তৃণমূল, বিজেপির মধ্যে না না তর্ক-বিতর্ক চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ সস্ত্রীক জগন্নাথ ধামে গিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্কের ঝড় তুলেছিলেন। ঘরের অন্দরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।

দুর্গাপুরের শঙ্করপুর সর্বজনীন এই দুর্গাপুজোর কিন্তু ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেইসব তর্ক-বিতর্ক পিছনে ফেলে এদিন এই মণ্ডপে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সাংসদ।  মণ্ডপে গিয়ে কিন্তু সৌমিত্র স্পষ্ট জানিয়ে দেন এ নিয়ে তিনি কোনও রাজনৈতিক বিতর্ক চান না। তাঁর সাফকথা, 'প্রতিমা আর মন্ডপ দর্শনে এসেছিলাম, এতে বিতর্ক কেন হবে?'

Continues below advertisement

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-র দেখা এই পুজো ২৬ তম বর্ষে পদার্পন করেছে। মণ্ডপসজ্জা ও প্রতিমা দেখে হাসিমুখে সৌমিত্রকে বলতে শোনা যায়, 'শংকরপুরের পুজো এবার খুবই ভাল হয়েছে। পরিবারকে নিয়ে তাই ঘুরতে চলে এলাম।' আর শঙ্করপুর সর্বজনীন দুর্গাপুজোর পুজোর উদ্যোক্তারা সৌমিত্র খাঁ-র উপস্থিতিতে বেশ খুশি। তাঁরা বলছেন, 'ভালোই তো উৎসব সবার।'

আজ মহাষ্টমী। সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গায় কুমারী পুজো। বেলুড় মঠেও হল কুমারীপুজো। মণ্ডপে মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি, মাইকে স্তোত্রপাঠ। মহাষ্টমীতে বিভিন্ন জায়গায় কুমারী পুজোরও আয়োজন। দুপুরেই সন্ধিপুজো। অষ্টমী পেরিয়ে নবমীতে প্রবেশ। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, সর্বত্রই উৎসবের আনন্দ চেটেপুটে নিতে প্রস্তুত বাঙালি।  মণ্ডপে মণ্ডপে বাড়বে রঙিন জামা-কাপড়ে সাজা মানুষের ভিড়।  বড়দের হাত ধরে ভিড়ের মাঝে কচি-কাঁচারাও৷ শুধু তো ঠাকুর দেখা নয় সঙ্গে দেদার আড্ডা, খাওয়া দাওয়া।

এদিন কিন্তু বাগবাজার সর্বজনীনে অষ্টমীর সকালটা অন্যরকম। লাঠি খেলার মাধ্যমে ১০৭ বছরের পুরনো বাগবাজার সর্বজনীনের পুজোয় বীরাষ্টমী প্রথা পালন করা হয়। পরাধীন দেশে লাঠি এবং তলোয়ার খেলার মাধ্যমে শরীরচর্চা করতেন বিপ্লবীরা। পরে তা মাতৃ আরাধনার অঙ্গ হয়ে যায়। সেই প্রথা মেনে বাগবাজার সর্বজনীনে এবারও মহাষ্টমীতে আয়োজন করা হয়েছে লাঠি খেলার।