অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা: বাঙালির প্রাণের উৎসব। সারা বছরই যার অপেক্ষা লেগে থাকে। দুর্গাপুজোর (Durga Puja) সময় যত এগিয়ে আসে, তত বাড়ে উন্মাদনা। এ ছবি বছর বছর ঘুরে ফিরে আসে। তারপর কয়েকটা দিন কার্যত আবেগে ভাসে বাঙালি। দূর দূরান্ত থেকে পুজোর টানে ঘরে ফিরে আসেন উৎসবপ্রেমী বাঙালি। এবারও তার অন্যথা হবে না বলাইবাহুল্য। শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউনও। 


দক্ষিণদাঁড়ি ইউথ সঙ্ঘের এবার ২৩ তম বছর। এবছর তাঁদের ভাবনা যাপনকথা। কেন এমন ভাবনা তা দর্শকের মনে হতেই পারেই। বলা হচ্ছে, এই দক্ষিণ দাঁড়িতে এমন কিছু মানুষ থাকতেন যারা মাটির বাসনকোসন থেকে ঠাকুরের মূর্তি তৈরি করতেন। এরপর ধীরে ধীরে শহরের হাওয়ায় সেই কাজ সংকুচিত হয়ে পড়ল। সেই বিষয়টিই এবারের থিম, এবারের ভাবনা। 


এ প্রসঙ্গে শিল্পী জানান, অত্যন্ত প্রাচীন জনপদ এই দক্ষিণ দাঁড়ি। এখানে এই সঙ্গে মাটির জিনিসপত্র তৈরি হয়, চাঁছে মূর্তি তৈরি হয় এখনও। যারা এখানে থাকেন এবং এই সব শিল্পকর্মের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের কাজ এবং জীবন, সবটাই ফুটে উঠবে আমার এই যাপনকথার কাজে। 


পুজো উদ্যোক্তাদের তরফে বলা হয়, আমরা আশাবাদী এই ভাবনা নিয়ে। দর্শকদের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারা এসে এই মণ্ডপ ঘুরে দেখুন। একটা ভাল কাজ আপনারা দেখতে পাবেন। অন্যরকম সাজসজ্জা এবং মাটির একটা গন্ধ অনুভব করতে পারবেন। 


মণ্ডপের যে বিশালত্ব তা আদতেই নজরকাড়া। বিভিন্ন ভাগে এই গোটা মণ্ডপটিকে ভাগ করা হয়েছে। পাশাপাশি নজর কাড়বে দেবী প্রতিমার মুখ। টেপা পুতুলের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে প্রতিমার মুখমণ্ডল। 


পঞ্জিকামতে, এবার মা আসছেন ঘোটক অর্থাৎ ঘোড়ায়। যার ফল হবে- ছত্রভঙ্গ। অর্থাৎ শাস্ত্র বলছে, এর জেরে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সামরিক অস্থিরতা বাড়বে। শুধু তা-ই নয়, মা দুর্গা ফিরবেনও ঘোটক বা ঘোড়াতে চড়েই।



মূলত, বাংলার আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত পালিত হয় দুর্গাপুজো। এই পাঁচটি দিন - ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এবং বিজয়া দশমী নামে পরিচিত। শুক্ল পক্ষ দেবীপক্ষ নামে পরিচিত। এই পক্ষের সূচনার অমাবস্যাটিকে মহালয়া বলা হয়। এই দিনে পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে মাতৃপক্ষের সূচনা হয়। ষষ্ঠীর দিন থেকে- প্রকৃত উৎসবের শুরু বলে ধরা হয়। কারণ এমনটা মনে করা হয় যে, এদিনই দেবী দুর্গা মর্তে এসেছিলেন। 


আরও পড়ুন, চিরন্তনের সঙ্গে দৈনন্দিন সংঘাত, আদর্শ পল্লির পুজোয় দেবী- শান্তি রূপেণ সংস্থিতা