মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর(পশ্চিম বর্ধমান) : রান্নাঘরে 'বিপ্লব'। রান্নার গ্যাসের দাম যেভাবে বাড়ছে সেদিকে নজর রেখে বিকল্প পথের সন্ধান দিল দুর্গাপুর কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা CMERI। সোলার চুলা তৈরি করলেন দুর্গাপুরের কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের বিজ্ঞানীরা।


রান্নাঘরে বিপ্লব আনল কেন্দ্রীয় গবেষণাগার CMERI-এর একদল বিজ্ঞানী। সংস্থার দুর্গাপুর ইউনিট প্রায় এক বছরের গবেষণায় তৈরি করে ফেলল সোলার চুলা। যাকে চলতি কথায় বলা যেতে পারে, সোলার উনুন। প্রতিদিন আড়াই ঘণ্টা ব্যবহার করলে সোলার প্যানেল, ব্যাটারি নিয়ে যার খরচা পড়ে যাবে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা। এবার এই সোলার চুলার ক্ষমতা যেভাবে বাড়ানো হবে, সেইভাবে এই খরচা বাড়তে থাকবে। 


উদাহরণ হিসেবে, চার ঘণ্টা ব্যবহারের জন্য, এই খরচা বেড়ে দাঁড়াবে ষাট হাজার টাকা। সোলার চুলার ইউনিটের দাম পড়বে পাঁচ হাজার টাকা, আর বাকি খরচা সোলার প্যানেল, ব্যাটারি সহ আলাদা যন্ত্রপাতির। এখন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় দুই সরকার যদি কৃষি ক্ষেত্রে সোলার পাম্পের জন্য যে হারে ভর্তুকি দিচ্ছে, সেই একইভাবে এখানে ভর্তুকি দেয় এই ক্ষেত্রে তাহলে এর দাম আরও কমে যাবে বলে দুর্গাপুর কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।


দুর্গাপুর CMERI-এর বিজ্ঞানী চঞ্চল লোহার বললেন, দুই সরকার একটু ভাবুক, কারণ যেভাবে রান্নার গ্যাসের দাম দিনের পর দিন বাড়ছে তাতে করে এই সোলার চুলা রান্নাঘরে বিপ্লব আনতে চলেছে। 


শুক্রবার দুর্গাপুর CMERI-য়ে আসেন বহুজাতিক বেশ কিছু সংস্থার প্রতিনিধরা। ঘুরে দেখেন গোটা ইউনিট, বিশেষ করে এই সোলার চুলা। যা রান্নাঘরে বিপ্লব আনবে। দুর্গাপুর কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার দেখে মুগ্ধ বহুজাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা। এই সময়ে সরকারের একটু সদর্থক ভূমিকা থাকলে নতুন এই আবিষ্কার দেশকে দিশা দেখাবে।


দুর্গাপুর CMERI-এর ডিরেক্টর হরিশ হিরানী বলেন, নতুন এই আবিষ্কার দেশকে দিশা দেখাবে। আরও বেশি করে মানুষের কাছে এই সোলার চুলা পৌঁছে দিতে এর ডিজাইনকে আরও আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাতে করে সাধারণ গৃহস্থ আরও উৎসাহী হবে। 


যেভাবে দিনের পর দিন রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ছে, চুলোচুলি চলছে এই ইস্যুকে সামনে রেখে, ঠিক তখন দুর্গাপুরের কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার স্বাভাবিকভাবেই গৃহস্থকে স্বস্তি দিতে চলেছে। যদি একসাথে অনেক সোলার চুলার উৎপাদন করার বরাত পাওয়া যায় তাহলে এর খরচা আরও কমবে বলে দাবি CMERI-এর বিজ্ঞানীদের।