মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর : জলবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে এবার অত্যাধুনিক মেশিন তৈরি করল দুর্গাপুরের কেন্দ্রীয় গবেষণাগার (C.M.E.R.I)-র বিজ্ঞানীরা। শনিবার এই ওয়াটার টেস্টিং ইউনিটের উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. সুভাষ সরকার। দুর্গাপুরের কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের বিজ্ঞানীদের দাবি, পূর্বাঞ্চলে দুর্গাপুরে প্রথমবার এই ধরনের ইউনিট তৈরি হল। এরই সঙ্গে আরও একটি অত্যাধুনিক যন্ত্রের উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। অত্যাধুনিক এই যন্ত্রের মাধ্য়মে নর্দমার জমা জল খুব সহজেই বের করে দেওয়া সম্ভব হবে। অত্যধিক বৃষ্টির কারণে নিকাশি ব্যবস্থায় যেখানে অচল হয়ে পড়ে। অত্যাধুনিক এই যন্ত্র খুব সহজেই জমা জল বের করে দেওয়ার কাজ করবে বলে জানা গিয়েছে। জমা জলে বাড়তে পারে ডেঙ্গির মশা। নিকাশি ব্যবস্থাকে আরও অত্যাধুনিক মানের করে তুললে খুব সহজেই ডেঙ্গি-সহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে মত সংস্থার।


জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের বিজ্ঞানীদের তৈরি ওয়াটার টেস্টিং সেন্টারের অত্যাধুনিক যন্ত্রের জন্য খরচ হয়েছে ৪৭ লক্ষ টাকা।  


সিএমইআরআই-এর অধিকর্তা ড. হরিশ হিরানি জানিয়েছেন, ‘ইতিমধ্যেই সব স্তরে এই যন্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফলভাবে হয়ে গিয়েছে। দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা, ডিভিসিতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত সকলের সঙ্গেই কথা বলা হবে।’


ওয়াটার টেস্টিং সেন্টারের উদ্বোধন করে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডক্টর সুভাষ সরকার বলেন, 'খুবই উন্নতমানের প্রযুক্তির ব্যবহার করেছেন বিজ্ঞানীরা। খুব শীঘ্রই রাজ্য সরকারের সঙ্গেই এই প্রসঙ্গে কথা বলা হবে, যাতে তারাও স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থাগুলিতে এই অত্যাধুনিক পরিষেবা নেওয়ার জন্য উদ্যোগী ভূমিকা নিতে বলে।'


এর পাশাপাশি জল নিকাশির অত্যাধুনিক যন্ত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ড্রেনের জমা জলে মশার লার্ভা জন্মাবে। এতে ডেঙ্গির সংক্রমণ বাড়তে পারে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে যাতে ডেঙ্গির প্রকোপ প্রতিরোধ করা যায়, তার জন্য বাড়াতে হবে সচেতনতা। কোথাও জল জমলেই তা সঙ্গে সঙ্গে বের করে দিতে হবে। বিজ্ঞানীদের তৈরি এই অত্যাধুনিক যন্ত্র নিকাশি ব্যবস্থায় কাজে আসবে। এর ফলে শুধু যে ডেঙ্গির মতো রোগ প্রতিরোধ করা যাবে, তাই নয়। জলবাহিত বিভিন্ন রোগও আটকানো যাবে।'


কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডক্টর সুভাষ সরকার আরও বলেন, 'খুব কম খরচে স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থাগুলি ছাড়াও সাধারণ মানুষও এই কেন্দ্রীয় গবেষণা কেন্দ্র থেকে জল পরীক্ষা করতে পারবেন। বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলের বাসিন্দারা। কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের এই সাফল্যকে দেশের প্রতিটি কোণায় ছড়িয়ে দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও চেষ্টা করা হবে।'