ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, দত্তাবাদ : দত্তাবাদে ব্যবসায়ীকে অপরহরণ-খুনে গ্রেফতার ২ BDO ঘনিষ্ঠ। ধৃতদের মধ্যে রাজু ঢালি কলকাতায় BDO-র গাড়ির চালক, দাবি পুলিশ সূত্রে। আরেক ধৃত তুফান থাপা BDO-ঘনিষ্ঠ উত্তরবঙ্গের এক ঠিকাদার, খবর পুলিশ সূত্রে। খুনের ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যোগ ধৃতদের, দাবি পুলিশের। গত ২৯ অক্টোবর দত্তাবাদের স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় রাজগঞ্জের BDO প্রশান্ত বর্মণের।
রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণ যখন কলকাতায় আসতেন, তিনি যে গাড়ি চালাতেন, তার চালক ছিলেন রাজু ঢালি। তিনি নিউটাউনের বাসিন্দা। তাঁকে সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে রাজু ঢালিকে উত্তর ২৪ পরগনার নিউটাউন থেকে গ্রেফতার করে বিধাননগর কমিশনারেট। অন্যদিকে আরেক ধৃত তুফান থাপাকে গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তরবঙ্গ থেকে। বিধাননগর কমিশনারেট তাঁকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই তুফান থাপা রাজগঞ্জের বিডিও ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার। এই তুফান ঘটনার সময় কলকাতায় ছিলেন, যার প্রমাণ পুলিশ পেয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় সদুত্তর মেলেনি। অন্যদিকে, রাজু ঢালিকেও গ্রেফতারের পর টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গোটা ঘটনা তিনি স্বীকার করেছেন বলে দাবি পুলিশের।
জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন সল্টলেকের এবি ব্লকে উপস্থিত ছিলেন রাজু ঢালি এবং তুফান থাপা। পুলিশ সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। এমনকি যখন গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে দেহ ফেলে দেওয়া হয়, সেই সময়েও ধৃত এই ২ ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার ঘটেছিল এই সাংঘাতিক ঘটনা। তথ্য প্রমাণ লোপাট, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং খুনের এই মামলায় চার থেকে পাঁচজন অভিযুক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ২ অভিযোগকারী। এই দুই অভিযোগকারীর মধ্যে একজন হলেন সেই ব্যক্তি যিনি, ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর সঙ্গে অপহৃত হয়েছিলেন, যিনি দত্তাবাদের ওই বাড়ির মালিক। আরেকজন অশোক কর, যিনি দাবি করেছিলেন যে, তিনি বিডিও- র বাড়িতে কুকুর দেখাশোনার কাজ করতেন।
এই ২ অভিযোগকারীর অভিযোগ পাঁচজন ছিল। বেধড়ক মারধর করছিল তারা। উপস্থিত ছিলেন বিডিও-ও। বিকেল নাগাদ ছেড়ে দেওয়া হয় এই অশোক করকে। কয়েকদিন আগে এই অশোক কর দাবি করেছিলেন যে বিডিও-র বাড়ি থেকে তিনি সোনা চুরি করেছিলেন। সেই সোনা তিনি দেন দত্তাবাদের স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যাকে। দত্তাবাদের ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ী তা গলিয়ে ফেলেন। অশোক করের আরও অভিযোগ বিডিও এবং আরও বেশ কয়েকজন তাঁকে এবং স্বপন কামিল্যাকে সল্টলেকের এবি ব্লকের একটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। দু'জনকেই বেধড়ক মারধর করা হয়। বেল্ট, লাঠি দিয়ে পিঠে, মাথায়, হাতে-পায়ে বেপরোয়া ভাবে মারধর করা হয়। এই সময় উপস্থিত ছিলেন বিডিও, তাঁর গাড়ির চালক, ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার, এমনই অভিযোগ করেন অশোক কর।