সমীরণ পাল, আবির দত্ত, দত্তপুকুর : ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেরামত ও তার ছেলে-সহ ৯ জনের মৃত্যুর ২ দিন পর, মোচপোল গ্রামে ফের বাজির পাহাড়ের খোঁজ পেল এবিপি আনন্দ। স্থানীয়দের দাবি, বাড়ি ভাড়া নিয়ে বেআইনি বাজির কারবার ফেঁদে বসেছিল কেরামত আলি। গুদামে এখনও মজুত রয়েছে প্রচুর রাসায়নিক। পাশেই আরও একটি বন্ধ ঘরে বাজি ঠাসা রয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। ঘন জনবসতি এলাকায় এ ধরনের গুদাম থাকায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা।
এই কেরামতের প্রস্তাবেই ঘর ভাড়া দিয়ে কত বড় বিপাকে পড়তেন, তা নিয়ে মুখ খুলেছেন স্থানীয়রা। কেরামতের প্রস্তাব গ্রহণ করলে কী বিপদ হত, তা ভেবে এখন শিউরে উঠছেন দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রামের বাসিন্দা সুখলাল বিবি। হয়ত সামসুল আলির মতোই পরিণতি হতে পারত তাঁরও।
তাঁর দাবি, বাজির ব্যবসা বাড়াবে বলে কয়েকমাস আগে কেরামত তাঁকে ঘর ভাড়া দিতে বলে। প্রস্তাবে রাজি হননি সুখলাল। তাঁর দাবি, তিনবছর আগে বাড়ির একটি ঘর কেরামতকে ভাড়া দিয়েছিলেন তিনি। ফুলঝুরি রাখবে বলে বস্তা বস্তা বারুদ আর রাসায়নিক রাখতে শুরু করে কেরামত। এক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা তো নয়ই, এমনকী বাড়িওয়ালারও নিষেধও কেরামত শোনেনি বলে সুখলালের দাবি। কীভাবে এত বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল দত্তপুকুরে বেআইন বাজির বাদশা কেরামত আলি? উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন :
'বাজির কারখানা'য় তরল রাসায়নিক, স্টোনচিপ, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, কী তৈরি হত? কী বলছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা?
অন্যদিকে, দত্তপুকুরের মোচপোলের পাশেই কাঠুরিয়া গ্রাম। সেখানে আবার গ্যারাজ ভাড়া নেওয়ার নামে বাজি মজুত করা শুরু করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা আলতাফ, এমনই দাবি বাড়ি মালিকের। অভিযোগ, বিস্ফোরণের পর থেকেই আলতাফ বেপাত্তা। ফোনেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এদিকে, গুদামভর্তি নিষিদ্ধ শব্দবাজি। বিস্ফোরণের আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে বাড়ি মালিক ও কাঠুরিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের।
ইতিমধ্যেই দত্তপুকুরের মোচপোল, কাঠুরিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ১ হাজার ৬০০ কেজি নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রাতে ৫-৬টি গাড়ি করে উদ্ধার হওয়া বাজি নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। বাজি উদ্ধারে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি, FIR-এ নাম থাকা রমজান আলি ওরফে কালোর খোঁজ করছে পুলিশ। মূল অভিযোগকারী প্রভাস চক্রবর্তীর অভিযোগে নাম রয়েছে এই ISF কর্মীর। তাঁর বিরুদ্ধে কেরামত আলির সঙ্গে যোগসাজশে বেআইনি বাজি কারবারে মদত জোগানোর অভিযোগ রয়েছে।