আবির দত্ত, কলকাতা: রবিবারের সকালে হঠাৎ তীব্র বিস্ফোরণ (Duttapukur Incident) । কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব শেষ। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে বাইরে বেরোতেই স্থানীয়রা দেখেন, চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ছিন্নভিন্ন দেহ। আর এরপরই প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় তৃণমূল (TMC) নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও ওঠে অভিযোগ। তবে এবার উঠছে 'লুঠপাট'এর অভিযোগ।
দত্তপুকুরের (Duttapukur Blast) মোচপোল গ্রামে বিস্ফোরণের পর কি এলাকায় লুঠপাট চলেছে? সামসুল আলির বাড়ির উল্টোদিকের প্রতিবেশী অন্তত তেমনই দাবি করেছেন। বিস্ফোরণ জখম হয়েছেন এই বাড়ির চার সদস্য। ঘটনার পর সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়েছে পরিবার। অভিযোগ, বাড়িতে রাখা সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার হদিশ মিলছে না। তবে কি বিস্ফোরণের পর হুড়োহুড়ির মধ্যে লুঠপাটও চলেছে? উঠছে প্রশ্ন।
এমনটা সাধারণত হয়ে থাকে কোনও দুর্ঘটনার সময়। বিমান দুর্ঘটনা কিংবা ট্রেন দুর্ঘটনার পর ওই স্থানে লুঠপাঠের মতো ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি করমণ্ডল দুর্ঘটনার সময় সেই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। ট্রেন বগি থেকে যাত্রীদের টাকা পয়সা, মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে চলে লুঠতরাজ। কিন্তু দত্তপুকুরেও এমন চিত্র, শিউরে ওঠার মতোই।
এদিকে, দত্তপুকুরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৯ জনের মৃত্যুর পর টনক নড়েছে পুলিশের। গতকাল রাতে দত্তপুকুরের মোচপোল, কাঠুরিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ১ হাজার ৬০০ কেজি নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রাতে ৫-৬টি গাড়ি করে উদ্ধার হওয়া বাজি নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। বাজি উদ্ধারে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি, FIR-এ নাম থাকা রমজান আলি ওরফে কালোর খোঁজ করছে পুলিশ। মূল অভিযোগকারী প্রভাস চক্রবর্তীর অভিযোগে নাম রয়েছে এই ISF কর্মীর। তাঁর বিরুদ্ধে কেরামত আলির সঙ্গে যোগসাজশে বেআইনি বাজি কারবারে মদত জোগানোর অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন, অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে কাজে যোগ ছেলের, দত্তপুকুরে বিস্ফোরণে মৃত শাহবাজের পরিবারে হাহাকার
জানা গিয়েছে, দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রামে রমরমিয়ে চলত কেরামত আলির বেআইনি বাজি কারবার। বিস্ফোরণস্থলের কয়েকশো মিটার দূরে মজুত করা রয়েছে বাজি ও রাসায়নিক। ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেরামত ও তার ছেলে-সহ ৯ জনের মৃত্যুর ২ দিন পর, মোচপোল গ্রামে ফের বাজির পাহাড়ের খোঁজ পেল এবিপি আনন্দ। স্থানীয়দের দাবি, বাড়ি ভাড়া নিয়ে বেআইনি বাজির কারবার ফেঁদে বসেছিল কেরামত আলি। গুদামে এখনও মজুত রয়েছে প্রচুর রাসায়নিক। পাশেই আরও একটি বন্ধ ঘরে বাজি ঠাসা রয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। ঘন জনবসতি এলাকায় এ ধরনের গুদাম থাকায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এর আগেও গুদাম ভাড়া করে বাজির কারবার চালাত কেরামত। বসতি এলাকায় বিপজ্জনক ব্যবসা নিয়ে আপত্তি জানালে কেরামত আলি হুমকিও দিত বলে অভিযোগ।