কমলকৃষ্ণ দে ও রানা দাস, জামালপুর (পূর্ব বর্ধমান ): পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে প্রকাশ্যে তৃণমূলের দুই সংঘাত। দলের ব্লক সভাপতিকে পরিবর্তনের দাবিতে তৃণমূল প্রধানের নেতৃত্বে পথ অবরোধ করেন কর্মীদের একাংশ। এমনকি, বিজয় সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে ব্লক সভাপতিকে ক্লাস ফোর পাস বলে কটাক্ষও করেন প্রধান। জামালপুরের চকদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা।


তৃণমূল প্রধান গৌরসুন্দর মণ্ডলের দাবি, বিজয়া সম্মিলনী বানচাল করতে বাস, গাড়ি, ট্রেকারে করে কর্মীদের আনা যাবে না বলে রীতিমতো হুইপ জারি করেন ব্লক সভাপতি। এই প্রসঙ্গেই দলীয় কর্মীদের সমর্থন নিয়ে ব্লক সভাপতিকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তৃণমূল প্রধান। প্রতিক্রিয়া এড়িয়েছেন ব্লক সভাপতি মেহমুদ খান। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। তৃণমূল নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।  


জামালপুরের চকদিঘি পঞ্চায়েতের ণমূল নেতা ও প্রধান গৌরসুন্দর মণ্ডলের কথায়, আপনারা যাতে আমাদের কাছে না আসতে পারেন, জামালপুর ব্লকের মহামান্য সভাপতি গতকাল সেই সমস্ত ইউনিয়নে হুইপ করে বাস তুলে নিয়েছেন। পারলেন কি? হুইপ করে বাস তুলে নিয়েও উনি মানুষকে আটকাতে পারলেন কি?ওনার দুর্বলতা কোথায়, আজকে প্রমাণ হয়ে গেল। উনি ভয় পান আমাদের।


সামনের বছর ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিল মাসে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে প্রশাসন সূত্রে। তার আগে ফের তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে সামনে এসে পড়ল দলের কোন্দল। এমনকি জামালপুরের ব্লক সভাপতিকে ক্লাস ফোর পাস বলেও কটাক্ষ করলেন তৃণমূল পরিচালিত চকদিঘি পঞ্চায়েতের প্রধান। 


গৌরসুন্দর মণ্ডল আরও বলেন, দল ওনাকে সম্মান দিয়েছে। একটা মূর্খ লোককে সম্মান দিয়েছে। একটা মূর্খ লোককে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি করেছে। যে ক্লাস ফোর পাস নয়। 


দলের ব্লক সভাপতিকে পরিবর্তনের দাবিতে তৃণমূল প্রধানের নেতৃত্বে পথ অবরোধ করেন কর্মীদের একাংশ। যদিও জামালপুরের ব্লক সভাপতি জানিয়েছেন, দলের ঊর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। যা বলার ওনারা বলবেন। 


 বর্ধমানের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের কথায়, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। তাদের একটাই নীতি টাকা তোলা।


পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ব্লক সভাপতি জানিয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখব। প্রকাশ্যে বলা উচিত নয়। দলের ফোরাম আছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয় নয়। 


জনসংযোগে জোর দিতে জেলায় জেলায় বিজয়া সম্মিলনী করছে তৃণমূল। কিন্তু সেই মঞ্চেই বারবার প্রকাশ্যে চলে আসছে দলের কোন্দল। যার জেরে পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসক শিবিরে অস্বস্তি বাড়ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ ।