কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান : বর্ধমান স্টেশন (Burdwan Station) চত্বরে দুষ্কৃতী তাণ্ডব। অভিযোগ, গতকাল রাত ১২টা নাগাদ লাঠি, বাঁশ, ধারাল অস্ত্র নিয়ে বেশ কয়েকজন হঠাৎই চড়াও হয়। স্টেশন চত্বরে দোকান, ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, পার্কিং এলাকায় ভাঙচুর চালায় তারা। মারধরের পাশাপাশি, একাধিক দোকান, গাড়ি ও বাইক ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা। ৩ জন আহত হন। বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে রাতে ঘটনাস্থলে যান বর্ধমান থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তী। র‍্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।


ঘটনার নেপথ্যে উঠে আসছে রাজনৈতিক বিবাদের খবর। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরেই মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে সূত্রের খবর। গোটা ঘটনা ঘিরে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, আইএনটিটিইউসি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি ইফতিকার আহমেদ ওরফে পাপ্পু ও বর্ধমান পৌসভার ৭ নং ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা গোলাপ সোনকার-র গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল বর্ধমান স্টেশন চত্বর। 


ইফতিকার আহমেদ-এর অভিযোগ, দলকে বদনাম করা ও এলাকা দখলের জন্য একদল দৃষ্কৃতী রাত বিরেতে এই হামলা চালায়। প্রায় ১০ থেকে ১২ টি দোকানে, ৮ থেকে ১০ টি গাড়ি ও বাইকে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। হামলাকারীদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল বলেই অভিযোগ আইএনটিটিইউসি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি ইফতিকারের। তাঁর অভিযোগ, সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী বিজেপি যোগদানের পর আপাতত তৃণমূলে ঢুকে এইসব কাণ্ড করেছে। গোলাপ শোনকারের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে বলেই তাঁর অভিযোগ। পাল্টা র্ধমান পৌসভার ৭ নং ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা গোলাপ শোনকারের দাবি, তাঁর ছেলেকে স্টেশন চত্বরে প্রথমে গালিগালাজ ও মারধর করা হয়। এরপর এলাকার কিছু লোক স্টেশন চত্বরে যায় কেন মেরেছে জানতে। যদিও কেউ কোনও ভাঙচুর চালায়নি। নিজেরাই ভাঙচুর চালিয়ে তাঁকে ফাঁসাতে চাইছে বলেও অভিযোগ তাঁর।


আরও পড়ুন- ‘তদন্তে সহযোগিতা করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্যা কোথায়?’ প্রশ্ন হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হার


যে ঘটনার জেরে স্টেশন এলাকা সোমবার সকালেও বেশ থমথমে। ইফতিকার আহমেদের নেতৃত্বে বর্ধমান স্টেশন চত্ত্বর থেকে পার্কাস রোড পর্যন্ত মিছিল করা হয়। ঘটনাস্থলে যান বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস। তিনি জানান, গাড়ি ও দোকান ভাঙা হয়েছে,বর্ধমান শহরে কোনওরকম গুণ্ডামি বরদাস্ত করা হবে। প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে তাদের ছাড়া হবে না। যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। জেলা বিজেপির সাধারন সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র অভিযোগ করেন, স্টেশন থেকে প্রতিদিন লাখ টাকা তোলা তোলা হয়। সেই টাকার ভাগ নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা। যার জেরে ক্ষতিগ্রস্থ হয় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা, স্টেশনে নিত্যযাত্রীরা যেতে ভয় পাচ্ছেন। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।


আরও পড়ুন- অসময়ে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা এড়াতে কী কী করবেন এবং কী কী করবেন না