রানা দাস, কাটোয়া: তাঁতের শাড়িতে (Handloom Saree) এবার প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi) ছবি ফুটিয়ে তুললেন কাটোয়ার (Katwa) জগদানন্দপুরের তাঁতশিল্পী জগবন্ধু দালাল। কয়েক মাস আগে তাঁতশিল্পী জগবন্ধু একটি তাঁতের শাড়িতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর চিত্র ফুটিয়ে তুলেছিলেন। আর এবার তাঁর সাবজেক্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ শাড়িটি নরেন্দ্র মোদিকে ( PM Narendra Modi) উপহার দেওয়ার স্বপ্নও দেখছেন জগবন্ধু।
বাংলার তাঁতের শাড়ির উপর আগ্রহ বাড়ানোর জন্য শিল্পী জগবন্ধুর লড়াই চালাচ্ছেন। এই শিল্প আরও মানুষের কাছে অভিনবভাবে পোঁছে দিতে তাঁর নিরন্তর প্রচেষ্টা ও শিল্পকর্ম চলছেই। শাড়িতে কখনও বিদ্যাসাগর, কখনও রবীন্দ্রনাথ তো কখনও মুখ্যমন্ত্রী ছবি ফুটিয়ে সকলকে তাক লাগিয়েছেন তিনি। এখন আবার প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি অনায়াসে শাড়ির ওপর ফুটিয়ে তুলেছেন বছর চল্লিশের জগবন্ধু। তাঁতের এই অভিনব শাড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৪২ ইঞ্চির পূর্ণাবয়ব ছবিসহ দেশের নানান প্রকল্পের নামও তুলে ধরা হয়েছে। সবটাই ফুটে উঠেছে তাঁর শৈল্পিক নিপুনতায়। ১৫০ কাউন্ট খাদি এবং ৮০ কাউন্ট সুতো দিয়ে সাত মিটার দীর্ঘ এই শাড়ি তৈরি করতে আশি দিন সময় লেগেছে জগবন্ধুর।
কী বলছেন শিল্পী জগবন্ধু? তাঁর কথায়, তাঁত শিল্পী হিসেবে আমি গর্বিত। এর আগে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ফুটিয়ে তুলেছিলাম শাড়িতে। এবার তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চিত্র ফুটিয়ে তুলতে পারি কিনা সেই চেষ্টা করছিলাম। দেখলাম হয়ে গেল। শুধু প্রধানমন্ত্রীই নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের সমস্ত প্রকল্পের উল্লেখ রয়েছে এই একটি শাড়িতেই'। জগবন্ধু আরও জানিয়েছেন, এর পরে তাঁর আরও ব্যক্তিত্বের ওপর কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে। কে কে রয়েছে তাঁর তালিকায়? জগবন্ধু জানিয়েছেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অরিজিৎ সিং-সহ আরও অনেকের ওপরেই কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে তার। তবে একটি তাঁতের শাড়ির ওপর বুননের মাধ্যমে গোটা অবয়ব ফুটিয়ে তোলা মোটেই মুখের কথা নয়। তাঁকে এই কাজে সাহায্য করেছেন তাঁর স্ত্রী, বাবা এবং মা। কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন জগবন্ধু।
তবে হাল ফ্যাশনে রকমারি শাড়ির রমরমায় বাংলায় তাঁতের শাড়ির চাহিদা কমছে, তা ভেবে হতাশা প্রকাশ করছেন জগবন্ধু। শঙ্কাও রয়েছে। তাঁর কথায়, 'তাঁতিরা কাজ না পেয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। তাই তাঁদের কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন অভিনব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি'। নতুন ভাবনার মধ্যে দিয়ে অভিনব শাড়ি তৈরি করে আসলে তাঁতের শাড়ির ওপর সাধারণ মানুষের আগ্রহ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন জগবন্ধু। তিনি আরও জানিয়েছেন, 'আগামীদিনে তাঁতিভাইদের জন্য কিছু করতে পারলে খুশি হব'। সবমিলিয়ে হারিয়ে যেতে বসা তাঁত শিল্পকে ফের চাঙ্গা করতে চেষ্টা জিইয়ে রেখেছেন জগবন্ধু। তাঁর বিশ্বাস, ফের তাঁতের প্রতি আগ্রহ ফিরবে ক্রেতাদের।
আরও পড়ুন: Jalpaiguri News: কবে হবে মহকুমা? ধূপগুড়িতে অনশন শুরু নাগরিক মঞ্চের