পশ্চিম মেদিনীপুর: ঝাড়গ্রামে অভিষেকের কনভয়ে হামলার দায় ইতিমধ্যেই বিজেপির দিকে ঠেলেছে তৃণমূল। মূলত শালবনিতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় এদিন সন্ধ্যায়। অভিষেকের কনভয় বেরিয়ে যাওয়ার পরেই শুরু হয় ইটবৃষ্টি। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় অভিযোগ। এই ঘটনায় ট্যুইটে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya)। তিনি বলেছেন,  'দিলীপ ঘোষ সেল্ফগোল করে ফেলার পর বিজেপির মেকআপ করা খুব দরকার ছিল।' আর এবার অভিষেকের কনভয়ের যাত্রাপথে কুড়মিদের বিক্ষোভের ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া দিলেন বিজেপি সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।


দিলীপ ঘোষ বলেন, 'হিংসার আশ্রয় নিয়ে আন্দোলনকে কেউ সমর্থন করে না। আমরা নিন্দা করি। কিন্তু দুই দিন আগেই তো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, আপনারা দিলীপ ঘোষের বাড়ি আক্রমণ করুন, আমি সবরকম সহযোগিতা করব। তখন মজা লাগছিল না নাকি কুড়মিদের ক্ষেপাতে।আরে আমি জঙ্গলমহলের ছেলে। আমি জানি কে আছে না আছে, ওখানে। উনি তো কালীঘাটের ছেলে, উনি কী করে বুঝবেন, কুরমিরা কী খায়, কী করে থাকে।' মূলত এদিন ট্য়ুইটে দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেছেন, 'দিলীপ ঘোষ সেল্ফগোল করে ফেলার পর বিজেপির মেকআপ করা খুব দরকার ছিল। হলুদ ফেট্টি মাথায় বেঁধে বিজেপির গুন্ডাদের প্ল্যান করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কুর্মিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারপর কোনও কুড়মি এই কাজ করবেন না', বলে দাবি দেবাংশুর।


যে পথে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) কনভয় (Convoy) আসার কথা, সেই পথই অবরোধ করলেন কুড়মিরা (Kurmi Agitation)। এবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের গড় শালবনিতে পাঁচ নম্বর রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। যার ফলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'তৃণমূলে নবজোয়ার' কর্মসূচি উপলক্ষে গজাসিমুলের সভাগামী বাস আটকে পড়ে,আটকে পড়ে পুলিশের গাড়ি। ওই রাস্তায় সমস্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।ওই রাস্তা দিয়েই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাওয়ার কথা। ফলে চিন্তায় পড়ে পুলিশ প্রশাসন। দফায় দফায় উত্তেজনা বাড়ে।


একই সঙ্গে বিনপুর থানার নারায়ণপুরে জমায়েত হন কুড়মিরা। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে ৫ নম্বর রাজ্য সড়ক অবরোধের পর বিক্ষোভ উঠে গেলে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের।এরপরেই ধুন্ধুমার বাধে গড় শালবনিতে। তৃণমূল সাংসদের কনভয় বেরিয়ে যাওয়ার পরই তুমুল ইটবৃষ্টি হয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের গাড়িতে, এমনই অভিযোগ। চলে ভাঙচুর, তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মারধরের অভিযোগও উঠেছে কুড়মিদের বিরুদ্ধে। 




বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়িও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। পরে মন্ত্রী বলেন, 'এর দায় কুড়মি নেতাদেরই নিতে হবে।' এদিন একের পর এক গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। বাঁশ লাঠি নিয়ে চড়াও হন অনেকে, চলে ইটবৃষ্টিও। আপাতত যা শোনা যাচ্ছে, তাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের শেষাংশেই এই কুড়মি রোষ পড়ে। শুধু গাড়ি নয়, বাইকে যাঁরা আসছিলেন, তাঁদের উপরও চড়াও হন কেউ কেউ। বাইক-আরোহীরা রাস্তায় পড়ে গেলে ফের তাঁদের মারধর করা হয়। বিশাল পুলিশবাহিনী থাকলেও পরিস্থিতি সামলাতে পারেননি। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও দেখা যায়। 



প্রসঙ্গত, গত ২৩ মে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বাঁকুড়ায়, তখনও কুড়মিদের জমায়েত হয়েছিল। একাধিক বার অভিষেকের কনভয় থামে সেখানে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে অভিষেক নেমে এসে কথা বলেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। তাঁদের আশ্বস্ত করে চলে যান। কিন্তু কোনও গণ্ডগোল হয়নি।




 




আরও পড়ুন, জানেন কি রান্নাঘরের এই মশলা জীবন বদলে দিতে পারে ?


আজ তাঁর কর্মসূচি শুরু হয়েছিল বান্দোয়ান থেকে। দহিজুড়িতে জনসংযোগ কর্মসূচি ছিল। সেখান থেকেই গণ্ডগোল শুরু হয়। নির্দিষ্ট করে বললে তিনি দহিজুড়িতে জনসংযোগ সেরে বেরিয়ে যাওয়ার পরই বিক্ষোভ বাড়ে বলে অভিযোগ। কাউকেই রেয়াত করা হয়নি। স্থানীয় তৃণমূল নেতা, সংবাদমাধ্যম কাউকেই রেয়াত করা হয়নি।  জেড প্লাস নিরাপত্তা পাওয়া অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলাকাণ্ডে ইতিমধ্য়েই নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে আগামীকালই শালবনিতে সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় চাপানউতোর রাজনৈতিক মহলে।