কলকাতা: নাম রেখেছিলেন খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। জন্ম, বেড়ে ওঠা সবকিছুই কবিগুরুর ছত্রছায়ায়। সেই অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) সঙ্গেই সংঘাত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের (Visva Bharati)। পৈতৃক বাড়ি 'প্রতীচী'র জমির কিছু অংশ ঘিরে বিতর্ক। তাতে বাগযুদ্ধ এসে পৌঁছেছে আইনি লড়াইয়ে। গোটা ঘটনায় এ বার মুখ খুললেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু (Kaushik Basu)। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্যর পাশেই দাঁড়ালেন তিনি। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তীব্র নিন্দা করলেন তিনি। 


অমর্ত্যকে জমি খালি করার জন্য উচ্ছেদ-নোটিস দিয়েছে বিশ্বভারতী


জমি বিতর্কে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং অমর্ত্যের টানাপোড়েন নিয়ে ট্যুইটারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কৌশিক। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়ির ১৩ ডেসিমেল জমি খালি করার জন্য উচ্ছেদ-নোটিস দিয়েছে বিশ্বভারতী। তার তীব্র নিন্দা করেছেন কৌশিক। অমর্ত্যকে যে ভাবে হয়রান করা হচ্ছে, তা গোটা দেশের লজ্জা বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। 



ট্যুইটারে কৌশিক লেখেন, 'বিশ্বভারতীর তরফে যে ভাবে অমর্ত্য সেনকে হয়রান করা হচ্ছে, তাঁকে উচ্ছেদ নোটিস ধরানো হয়েছে, তা ভারতের জন্য লজ্জার। অমর্ত্য ভারতের নাগরিক এবং গোটা বিশ্বের কাছে বরেণ্য। সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই অমর্ত্যের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর এই পদক্ষেপ। ভারতীয় গণতন্ত্রের পক্ষে শোভনীয় নয়'।


কৌশিক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, আমেরিকার খ্যাতনামা কর্নেল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক। বিশ্বব্যাঙ্কের মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবেই কর্মরত ছিলেন তিনি। অমর্ত্যের প্রতি বিশ্বভারতীর আচরণে যে ভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি, তাতে এখনও পর্যন্ত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে বিষয়টি যে বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে অন্যত্রও পৌঁছেছে, তা বুঝতে বাকি থাকে না। 


আরও পড়ুন: Hooghly News: সাজ সাজ রব সকাল থেকে, রথযাত্রার প্রস্তুতি মাহেশে, সূচনা চন্দনযাত্রা দিয়ে


অমর্ত্যের চিঠির পাল্টা, বিশ্বভারতীর তরফে নোটিসের উচ্ছেদ ধরানো হয়েছে তাঁকে। তাতে ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। নোটিসে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমি না ছাড়লে, প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করা হবে। বিষয়টি নিয়ে ঝড় বয়ে যাচ্ছে বঙ্গ রাজনীতিতেও। সেই আবহেই বিশ্বভারতীর ভূমিকায় সরব হলেন কৌশিকও। 


বিতর্কের কেন্দ্রে ১৩ ডেসিমল জমি। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, ১৯৪৩ সালে অমর্ত্যের বাবা প্রয়াত আশুতোষ সেনের নামে ৯৯ বছরের জন্য ১২৫ ডেসিমেল জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল৷ পরবর্তীতে ২০০৫ সালে এই জমি অমর্ত্যের নামে মিউটেশন হয়। এর পর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, প্রতীচীতে লিজের ১২৫ ডেসিমেল ছাড়াও অতিরিক্ত ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রাখা হয়েছে। 


নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনা করেন বলেই তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে, দাবি অমর্ত্যের


যদিও অমর্ত্য জানিয়েছেন,  বাল্য বয়স থেকে বিশ্বভারতীতে তিনি।  চিঁড়ে-মুড়ি খেয়ে ক্লাসে গিয়েছেন। তাঁর জমি তাঁর না হয়ে, বিশ্বভারতীর হল কী করে, প্রশ্ন তুলেছেন অমর্ত্য। জানিয়েছেন,  তাঁর বাবা জমি লিজ নিয়েছিলেন। লিজে তা লেখাও রয়েছে। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনা করেন বলেই তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে, অমর্ত্য এই দাবিও করেছেন।