সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: খাতায় কলমে এখনও দু'মাস বাকি রথযাত্রার (Rath Yatra 2023)। তবে হুগলির মাহেশে তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। রবিবার সেখানে সূচনা চন্দনযাত্রার। আগামী ৪২ দিন ধরে জগন্নাথ দেবের মাথায় চন্দন লেপন চলবে। তাকে ঘিরে সাজ সাজ রব পড়ে গিয়েছে। সকাল থেকে চূড়ান্ত ব্যস্ততা চোখে পড়ছে (Hooghly News)।
চন্দনযাত্রা শেষ হলে, তার পর শুরু হবে স্নানযাত্রা
এই চন্দনযাত্রা শেষ হলে, তার পর শুরু হবে স্নানযাত্রা উৎসব। গঙ্গা জল আর দুধ দিয়ে স্নান করানো হবে জগন্নাথ দেবকে। রীতি মেনে, স্নানের পর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে জগন্নাথের। তাই দু’সপ্তাহ মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে। ভক্তদের দেখা দেন না জগন্নাথ। কবিরাজের পাঁচন খেয়ে জগন্নাথ দেবের জ্বর সারে বলে কথিত রয়েছে। তার পরই মন্দিরের দরজা খোলে। এর পর রথে চেপে বলরাম, সুভদ্রাকে নিয়ে মাসির বাড়ি যান জগন্নাথ (Jagannath Rath Yatra)।
জগন্নাথ দেবের ধাম পুরীতে আজ থেকেই শুরু হয় রথ তৈরির কাজ। আর হুগলির মাহেশে সূচনা হয় চন্দনযাত্রার। অর্থাৎ অক্ষয় তৃতীয়ার দিন মাহেশে আক্ষরিক অর্থেই রথযাত্রার সূচনা হয়। কথিত রয়েছে যে, ৬২৭ বছর ধরে দারু কাঠ দিয়ে তৈরি জগন্নাথ দেবের মূর্তি এখনও একই রকম রয়েছে। কোনও ক্ষয় নেই তাতে।
এটাই মাহেশের জগন্নাথ দেবের মাহাত্ম্য। প্রতি বছর তাই কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় করেন সেখানে। করোনার জেরে মাঝে দু'বছর উৎসবে ছেদ পড়েছিল। পরিস্থিতে শুধরে যেতেই ফের আগের হইহই রইরই ভাব ফিরে এসেছে। রীতি মেনেই হচ্ছে সব কিছু। এ বারেও প্রচুর মানুষ ভিড়বেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ বছর রথযাত্রা পড়েছে আগামী ২০ জুন। এ বার ৬২৭ বছর মাহেশের রথযাত্রার।
মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইত, জগন্নাথ মন্দির সেবা ট্রাস্টের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী জানান,অক্ষয় তৃতীয়া হল একটি অত্যন্ত শুভ দিন। বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরামের আবির্ভাব দিবস। অক্ষয় তৃতীয়াতেই জগন্নাথের চন্দন যাত্রা উৎসব হয়। ৬২৭ বছর
সারা বছর রথের রক্ষণাবেক্ষণ হয় এখন
গত কয়েক বছরে আরও জৌলুস বেড়েছে মাহেশের রথযাত্রার। রাস্তার উপর বসানো হয়েছে তোরণ। অনাদরে পড়ে থাকায় আগে রথযাত্রার আগে ফি বছর রথ মেরামত করতে হতো। বদলাতে হতো কাঠ। তার পর সাজিয়ে গুছিয়ে রাস্তায় নামানো হতো রথ। তবে সেই সমস্যারও সমাধান হয়েছে গত কয়েক বছরে। সারা বছর রথের রক্ষণাবেক্ষণ হয় এখন।