প্রকাশ সিনহা,কলকাতা: রেশন দুর্নীতির (Ration Scam) তদন্তে এবার মেরুন ডায়েরিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে বলে দাবি করল ED। সূত্রের খবর, মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriya Mallick) প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক অভিজিৎ দাসের হাওড়ার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ওই ডায়েরিতে যাবতীয় টাকা লেনদেনের হিসেব লেখা রয়েছে। মন্ত্রীর হয়ে অভিজিৎ কোথায়, কাদের কাছ থেকে, কত টাকা তুলেছেন, তা লেখা আছে মেরুন ডায়েরিতে। ED-র দাবি, নিজের বয়ানে অভিজিৎ স্বীকার করেছেন, তিনি জ্যোতিপ্রিয়র হয়ে টাকা তুলতেন। ED সূত্রে খবর, মন্ত্রীর প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক অভিজিৎ দাসের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ওই ডায়েরিতে ব্যবসায়ী হিতেশ চন্দকের কাছ থেকেও টাকা তোলার কথা লেখা রয়েছে। ED-র দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে হিতেশ জানিয়েছেন, সমাজ সেবার নাম করে জ্যোতিপ্রিয় তাঁর কাছ থেকে ওই টাকা নেন। 


রেশন দুর্নীতি নিয়ে ED তদন্ত:
সন্দেশখালিকাণ্ডের ১০ দিন পর, ফের রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে ED-র অভিযান। কলকাতার চারটি জায়গায় একযোগে চলছে তল্লাশি। কলকাতার চৌরঙ্গিতে শঙ্কর আঢ্যর অফিস, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অরবিন্দ সিংয়ের অফিসে হানা দিয়েছেন ED-র আধিকারিকরা। কলিন্স স্ট্রিটের ফোরেক্স অফিসেও হানা ইডি-র।  কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, শঙ্কর আঢ্যর ফোরেক্স কোম্পানির মাধ্যমে রেশন দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। কালো টাকাও সাদা করা হয়েছে শঙ্করের কোম্পানির মাধ্যমে। ED-র দাবি, কীভাবে টাকা লেনদেন হয়েছে, তা জানতেই এদিন তৃণমূল নেতার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের অফিসে তল্লাশি চলছে। 


জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নামে বাজার থেকে টাকা তুলেছিলেন তাঁর পিএ অভিজিৎ দাস। তদন্তে নাকি এমনটাই জানা গিয়েছে বলে দাবি ইডি সূত্রে। কোথা থেকে টাকা এসেছে, কাদের কাছ থেকে এসেছে, কীভাবে টাকা তোলা হতো এবং কত পরিমাণে সবটাই নাকি এই ডায়েরির মাধ্যমে জানা গিয়েছে। কিন্তু চার্টার্ড অ্যাকাউন্টের অফিসে কেন? সূত্রের দাবি, সেই তথ্য অনুযায়ী নথিপত্রের খোঁজ পেতেই এদিন তল্লাশি চলছে বলে সূত্রের খবর। 


আদালতে যে নথি পেশ করেছিল ইডি সেখানে ২০০০০ কোটি টাকার হিসেব ছিল। যা প্রায় একশোটি ফরেক্স সংস্থার মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো হয়েছে বলে দাবি। তার মধ্যে ৯-১০ হাজার কোটি টাকা এই রেশন বণ্টনের দুর্নীতির টাকা, ২০০০ কোটি টাকা দুবাই পাঠানো হয়েছে। এই হিসেব খুঁজতে খুঁজতে ইডি জানতে পারে সল্টলেকে সিডকো গ্লোবাল টাওয়ারে অরবিন্দ সিংহ নামে এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্টের অফিসের ঠিকানা। দিনের পর দিন দুর্নীতির টাকা যে তছরুপ করা হয়েছে তার সূত্র ধরেই এই তদন্ত চলছে। কোনও শেল সংস্থা খোলা হয়েছিল কিনা সেটাই খোঁজা হচ্ছে।


আরও পড়ুন: ন্যায় যাত্রার দ্বিতীয় দিন! ঘন কুয়াশার মধ্যে পথে রাহুল