কলকাতা: রেশন দুর্নীতির (Ration Scam) কালো টাকা সাদা করা হয়েছিল তিনটি ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে, আদলতে দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তাদের দাবি, ওই তিনটি সংস্থাই খোলা হয়েছিল ২০০৮ সালে। তিনটি সংস্থার ঠিকানাও এক। এমনকি ওই তিন সংস্থার অংশীদার হিসেবে নাম রয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমানের আত্মীয় অভিষেক বিশ্বাসের। তবে বরাবর অভিষেকই অংশীদার ছিলেন না বলে দাবি ED-র। (Jyotipriya Mallick)
ওই তিনটি ভুয়ো সংস্থা হল, শ্রী হনুমান রিয়েলকন প্রাইভেট লিমিটেড, গ্রেসিয়াস ইনোভেটিভ প্রাইভেট লিমিটেড এবং গ্রেসিয়াস ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড। ED-র দাবি, ওই সংস্থাগুলির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অতিরিক্ত ৮ কোটি টাকা নগদে জমা পড়ে। সব মিলিয়ে ২০ কোটি টাকারও বেশি কালো টাকা সাদা করা হয়।
জ্যোতিপ্রিয়ের নির্দেশেই বাকিবুর ওই তিনটি সংস্থা অন্যদের নামে খুলেছিলেন বলে দাবি ED-র। আদালতে তারা জানিয়েছে, সেখানেই রেশন দুর্নীতির লাভের টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। ওই তিন সংস্থা থেকে পরে ঋণ হিসেবে টাকা যায় জ্যোতিপ্রিয়ের কাছে। সেই টাকা তিনি ফেরত দেননি। জিজ্ঞাসাবাদে বাকিবুরও এই তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি ED-র।
এছাড়াও আদালতে ED জানিয়েছে, আগে সংস্থার অংশীদার ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়ের স্ত্রী এবং কন্যা। জ্যোতিপ্রিয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে দু'টি সংস্থার রবার স্ট্যাম্পও উদ্ধার হয়। এজে অ্যাগ্রোটেক এবং এজে রয়্যাল নামের দুই সংস্থার রবার স্ট্যাম্প উদ্ধার হয়। ওই দুই সংস্থার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয় বলে দাবি ED-র। ওই দুই সংস্থাই যে ভুয়ো, তা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের ED-র দাবি, বাকিবুরকে সামনে রেখেই দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করেন জ্যোতিপ্রিয়।
এদিকে, শনিবার ED-র তলবে ফের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন অমিত দে এবং অভিজিৎ দাস। জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্ত সহায়ক অমিত। গতকালও একদফা হাজিরা দিয়েছিলেন তাঁরা। অভিজিতের বাড়ি থেকে 'বালুদা' লেখা মেরুন রংয়ের ডায়েরি উদ্ধার হয়েছে। তাতে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের হিসেব লেখা রয়েছে বলে দাবি ED-র। এর আগে, বৃবস্পতিবার নাগেরবাজারে অমিতের একাধিক ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় ED. ২০১১ সাল থেকে জ্যোতিপ্রিয়ের আপ্ত সহায়ক তিনি। নামে-বেনামে অমিতেরও প্রচুর সম্পত্তি এবং রিসর্টের হদিশ মিলেছে বলে জানিয়েছে ED. এমনকি রেশন দুর্নীতির টাকাও অমিতের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।