সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: 'বেনামি আবেদন' মামলায় হাইকোর্টের (high court) মন্তব্য়ের প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া শিক্ষামন্ত্রী (Education Minister) ব্রাত্য বসুর (bratya basu)। বললেন, 'নিশ্চিত ভাবেই মন্ত্রিসভায় (cabinet) সিদ্ধান্ত (decision) হয়েছিল। আইনি (legal) পরামর্শ (consultation) নিতে বলেছিলাম।’ এদিন হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন জানান, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নির্দেশেই অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি হয় করা হয়। শুনে বিস্মিত বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, '‘আইনে সংস্থান নেই, তবু কী ভাবে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির সিদ্ধান্ত?'


কী বলেন বিচারপতি?
‘রাজ্য মন্ত্রিসভার অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির সিদ্ধান্তে আমি বিস্মিত আপনি কি জানেন, কমিশনের আইন অনুযায়ী বেআইনি নিয়োগ করা যায় না? তার পরেও কেন তৈরি করা হল বেআইনি শূন্যপদ?’, ‘বেনামি আবেদন’ মামলায় শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শিক্ষাসচিব বলেছিলেন, 'বিষয়টি নিয়ে উপযুক্ত স্তর থেকে নির্দেশ এসেছিল। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ এসেছিল।' তাঁর দাবি, শিক্ষামন্ত্রী আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। এর পরে আইন দফতরের সঙ্গে কথা হয়। এজি-র সঙ্গেও কথা বলা হয় বলে জানান মণীশ জৈন। সঙ্গে সংযোজন, এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল বিষয়টি নিয়ে। শিক্ষাসচিবের দাবি, ‘মুখ্যসচিবকে জানিয়ে ক্যাবিনেটে নোট পাঠানো হয়।’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পাল্টা প্রশ্ন, ‘অবৈধদের নিয়োগ নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন আইনজীবীরা? ‘আপনার কি মনে হয় না যে অবৈধদের বাঁচানোর জন্যই এই অতিরিক্ত শূন্যপদ? অবৈধদের সরানোর কোনও সিদ্ধান্ত হয়েছিল?’ গোটা বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় ঝরে পড়ে তাঁর কথায়। বলেন, ‘আমি বিস্মিত যে কী ভাবে ক্যাবিনেটে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? মন্ত্রিসভাকে বলতে হবে যে তাঁরা অযোগ্য়দের পাশে নেই।' সঙ্গে জানান, ১৯ মে-র বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে এমন পদক্ষেপ করা হবে যা গোটা দেশে কখনও করা হয়নি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের মন্তব্য, 'হয় গণতন্ত্র সঠিক হাতে নেই, না হলে গণতন্ত্র বিকশিত হয়নি।'  সঙ্গে হুঁশিয়ারি, 'ক্যাবিনেটকে পার্টি করে দেব। সকলকে এসে উত্তর দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীক প্রত্যাহার করার জন্য বলব। দল হিসেবে তাদের মান্যতা প্রত্যাহার করতে বলব। সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছে করা যায় না।’

এখনও পর্যন্ত যা...
শূন্যপদে অযোগ্যদের নিয়োগে ‘বেনামি আবেদন’ মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য ও এসএসসি। প্রসঙ্গত গত কাল ‘বেনামি আবেদন’ নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চের রায়ই বহাল রেখেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছিল, ‘কী ভাবে অবৈধদের চাকরি দিতে এরকম আবেদন করল স্কুল সার্ভিস কমিশন?’ উল্লেখ্য়, কার নির্দেশে অবৈধদের জন্য শূন্যপদে চাকরিতে কোর্টে আবেদন করেছিল SSC? এটা কার মস্তিষ্কপ্রসূত? খুঁজে বের করতে গতকাল সিবিআইকে নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে রাজ্য ও SSC-। 


আরও পড়ুন:অনুব্রত মণ্ডলের আরও ১৪ দিনের জেল, জামিনের আবেদনই করলেন না আইনজীবীরা