পুর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: রেসিডেন্সিয়াল হাতির তাণ্ডবে (Bankura Elephant) অতিষ্ঠ বাঁকুড়ার (Bankura) দশ-পনেরোটি গ্রামের মানুষ। রাত হলেই মাঠের ফসল খেতে বেরিয়ে আসছে সে, অভিযোগ এমনই। গত কাল অর্থাৎ সোমবার এবং আজ, গড়বেতা বিক্রমপুর রাজ্য সড়কের জামবনি মোড়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে রাস্তা আগলে দাঁড়িয়ে থাকে সে। বন দফতরে বার বার জানিয়েও সুরাহা মেলেনি, শোনা গিয়েছে এমন কথাও।
কী জানা গেল?
দীর্ঘ দু'মাস ধরে এই তাণ্ডব চলছে বলে দাবি স্থানীয়দের। ফলে সমস্যায় পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। তাঁদের দাবি, রাত হলেই জঙ্গল-লাগানো মাঠের ফসল খেতে বেরিয়ে আসে হাতিটি। শুধু তাই নয়। গত কাল এবং আজ সকালে গড়বেতা-বিক্রমপুর রাজ্য সড়কের উপর জামবনির মোড়ে হাতিটি আড়াই ঘণ্টা ধরে রাস্তা আগলে দাঁড়িয়ে ছিল যার ফলে যাত্রীবাহি বাস-সহ সাধারণ মানুষের যাতায়াতে তীব্র সমস্যা হয়। স্থানীয়দের বক্তব্য, গত দু'মাস ধরে এলাকার মানুষ জন বন দফতরে এই নিয়ে বার বার অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও সুরাহা মেলেনি। তাঁদের অভিযোগ, খেতে কুমড়ো লাগানো হয়েছিল। হাতি এসে সেই কুমড়ো সমস্ত নষ্ট করে দিয়েছে। ফলে নতুন করে গাছ লাগাতে বাধ্য হন তাঁরা। বন দফতরের বক্তব্য, একলা থাকায় হাতিটি অন্যত্র যেতে পারছে না। মাঝে মাঝে পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলের দিকে হাতিটি নিয়ে যাওয়া হলেও ফের সেটি বাঁকুড়ার জামবনীর জঙ্গলে ফেরত চলে আসে। ফলে সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদেরই একজন, তরুণ রক্ষিত, এবিপি আনন্দকে বললেন, 'গত কাল সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে ৭:৩০টা, আবার আজ সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ৭.৩০টা পর্যন্ত রাস্তা আটকেছিল হাতিটি।' এই তাণ্ডবের শেষ কোথায়? জানে না কেউ।
বার বার দাপট...
পশ্চিমের জেলাগুলিতে হাতির দাপটের কথা বার বার শোনা গিয়েছে। গত বছর জুলাই মাসে যেমন ঝাড়গ্রাম জেলার একাধিক জায়গায় তাণ্ডব দেখায় হাতির দল। যেমন ঝাড়গ্রাম ব্লকের সাপধরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বড় পিপড়ি এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছিল তারা। খাবারের সন্ধানে ঢুকে ১৩টি হাতির দল বড়পিপড়ি গ্রামের বাসিন্দা গুনা মাহাতোর বাড়ি ভেঙে দেয়। স্থানীয়রা হাতিগুলিকে তাড়া করলে সেগুলি পুকুরিয়া বিটের পাঁচামি গ্রামের দিকে চলে যায়। কিন্তু সেখানেও তছনছ করে। অভিযোগ, পাঁচামি গ্রামের রাজু মুর্মুর বাড়ি ভেঙে দেয় তারা। সেখান থেকে স্থানীয়দের তাড়া খেয়ে পুকুরিয়া বিটের মাসাংডিহির জঙ্গলের দিকে চলে যায় হাতির দল। কিন্তু আতঙ্ক কমেনি। ওই এলাকার বাসিন্দাদের কার্যত গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটাতে বাধ্য হন বেশ কয়েকদিন।
আরও পড়ুন:সৌরনীলের মৃত্যুতে এখনও হাহাকার, সরেছেন হকাররাও, পার্থর দফতর সরাতে রা কাড়ছেন না কেউ