পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : দু’-দু’বার ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়েও কাবু করা যায়নি ওড়িশার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে পালানো বাঘিনীকে। গতকাল ভোরে পুরুলিয়ার ডাঙরডিহির জঙ্গল থেকে বাঘিনি ঢুকে পড়েছিল বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের গোঁসাইডিহির জঙ্গলে। বাঘিনীর অবস্থান নিশ্চিত হতেই তাকে বাগে আনার চেষ্টা শুরু করে বন দফতর। দিনের আলোয় দেখতে পেয়ে গতকাল দুপুরে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়েন বন দফতরের কর্মীরা। জাল দিয়ে জঙ্গলের চারদিক ঘিরে আগুন জ্বালিয়ে রাতভর পাহারা দেন বন দফতরের কর্মীরা। এরপর ইনফ্রারেড থার্মাল ড্রোনের সাহায্যে বাঘিনীর লোকেশন ট্র্যাক করে রাতে ফের ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। ঘুমপাড়ানি গুলি আদৌ বাঘিনীর গায়ে লেগেছে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
কিছুতেই বাগে আসছে না বাঘিনী। তাকে ফাঁদে ফেলতে গিয়ে বারবার নাস্তানাবুদ হচ্ছেন বনকর্মীরা। ওড়িশার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে পালানো বাঘিনীর জঙ্গলমহল সফর চলছেই। এক জেলা থেকে আরেক জেলা, একের পর এক ফাঁদ এড়িয়ে বারবার জায়গা বদল করছে বাঘিনী। ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ার পর বাঘিনী এখন রয়েছে বাঁকুড়ায়। ৩০ থেকে ৪০টি পয়েন্ট করে মশাল জ্বালিয়ে ব্যারিকেড করে চলছে নজরদারি। পাশাপাশি ড্রোনের মাধ্যমেও চলছে পর্যবেক্ষণ। বাঘিনী কোথায় রয়েছে তা চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। ফের ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বাঘিনীকে বাগে আনার চেষ্টা চালাবেন বনদফতরের কর্মীরা।
বাঘিনীকে বাগে আনতে কী না করছে বনদফতর। খাঁচা পাতা হয়েছে। খাঁচার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পাতা হয়েছে জালও। টোপ হিসেবে খাবারও রাখা হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও রেডিও কলারের মাধ্যমে শুধুই নিজের অবস্থানের জানান দিয়েছে এই বাঘিনী। না ফাঁদে পা দিয়েছে। না টোপ গিলেছে। অথচ খিদের জ্বালায় জঙ্গলে চড়তে যাওয়া গবাদি পশুদের উপর হামলা চালিয়েছে এই বাঘিনী। কিন্তু কোনও ভাবেই বাগে আসছে না এই বাঘিনী।
খাঁচার পাশ দিয়ে ঘুরলেও খাচ্ছে না টোপ। দেখা যাচ্ছে, টোপের ছাগল নয়, শিকার করেই খিদে মেটাচ্ছে বাঘিনী। টোপ দেওয়া ছাগল ছুঁয়েও দেখছে না বাঘিনী, এদিকে চড়তে চড়তে ঘাড় মটকাচ্ছে জঙ্গলে যাওয়া ছাগলের। টোপে অরুচি, পছন্দ গৃহপালিত গবাদি পশু। মৃত ছাগলের শরীরে থাবার চিহ্ন দেখে বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না এ কার কীর্তি। তবুও নিশ্চিত হতে পরীক্ষা নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বনবিভাগ।
ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে উধাও হয় দুই বাঘিনী। গলায় পরানো রেডিও কলারের মাধ্যমে ঝাড়খণ্ডে খোঁজ মেলে একটি বাঘিনীর। অন্যটি পাড়ি দিয়েছিল বাংলায়। সেই এখনও বাগে আসেনি।
আরও পড়ুন- জাল পাসপোর্টের কাজ ছাড়তে বলেছিলেন মা, পাত্তাই দেননি মনোজ
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।