ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: সব ঠিক থাকলে আগামী শনিবার বাড়ি (Release From Hospital) ফিরতে পারেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee), এমনই খবর হাসপাতাল সূত্রে। ১ ইউনিট রক্ত দেওয়ার পরে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর (Ex Chief Minister) শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখবেন চিকিৎসকরা। আগামীকাল বেলা সাড়ে ১২টায় ফের বসবে মেডিক্য়াল বোর্ড। প্রয়োজনে ফুসফুস বিশেষজ্ঞ ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়ের পরামর্শ নেওয়ার ভাবনাও রয়েছে।
এখন কী অবস্থা?
অত্যন্ত ধীরগতিতে হলেও শারীরিক সূচকগুলি এখনও পর্যন্ত ইতিবাচক দিকেই রয়েছে যা দেখে আশাবাদী চিকিৎসকরা। তবে আজ রাতে রক্ত দেওয়ার যে প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল, তা বেশ কিছু কারণে বিলম্বিত হওয়ায় আজকের মতো স্থগিত করা হয়। আগামীকাল সকালে সেটি হওয়ার কথা। চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী জানান, রক্ত রিকুইজিশন করে আনানো, ক্রস ম্যাচিং ইত্যাদিতে অনেকটা সময় চলে যাওয়ায় প্রক্রিয়া শুরু হতে রাত হয়ে যেত। সেক্ষেত্রে রক্ত দেওয়ার পর কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হলে সমস্যা হতে পারে। তাই আগামীকাল সকালে রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার পর বুদ্ধবাবুর হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পরীক্ষা করে পরের ইউনিট ব্লাড দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিনই ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সংক্রমণ এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯০ শতাংশের বেশি। ১-২ লিটার, অর্থাৎ ন্যূনতম অক্সিজেন সাপোর্ট লাগছে। রক্তচাপ, পালস রেট স্বাভাবিক। অ্যান্টিবায়োটিক চলছে। অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। দিনে ২ বার করে হচ্ছে চেস্ট ফিজিওথেরাপি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আজ সকালে বেশ কিছু রক্ত পরীক্ষা হয়। তবে ফুসফুসে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ায়নি, শ্বাসকষ্টও কিছুটা কমেছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে আজ হাসপাতালে আসেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
গতকাল, সোমবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখে এসে মমতা বলেন, 'আমি দেখলাম ওঁর জ্ঞান আছে। হাত নাড়লেন। ভালই আছেন। ভেন্টিলেশন খুলে নেওয়া হয়েছে। বাইপ্যাপ সাপোর্ট চলছে। আমার দেখে মনে হয়েছে উনি ভালই আছেন। বাকি চিকিৎসকরা জানাবেন।' যারপরই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকরা সরকারিভাবে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন খুলে নেওয়ার কথা জানান। আগের থেকে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অনেকটা ভাল আছেন'।
বাধা দিচ্ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী?
শুধু শারীরিক অসুস্থতা নয়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর জেদের কাছেও মাঝেমাঝে হার মানতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। ভেন্টিলেশন থেকে বেরোনোর পর সম্পূর্ণ সচেতন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেখানেই গোল বেঁধেছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বারবার বাইপ্যাপ সাপোর্ট খুলে ফেলতে চাইছেন বুদ্ধবাবু। গতকাল রাতেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। চিকিৎসকদের জানান, তিনি সুস্থ আছেন, এসব লাগবে না। শেষমেষ বুদ্ধবাবুকে বুঝিয়ে রাজি করান চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আপাতত ঠিক হয়েছে, ৫-৬ ঘণ্টা বাইপ্যাপ চলার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম দিয়ে ফের চালানো হবে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সংক্রমণ এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। অ্যান্টিবায়োটিক চলছে। ১-২ লিটার, অর্থাৎ ন্যূনতম অক্সিজেন সাপোর্ট লাগছে। তবে এখনও রাইলস টিউব দিয়ে তরল খাবারই খাওয়ানো হচ্ছে বুদ্ধবাবুকে। যদিও তাতেও আপত্তি রয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর।