কলকাতা: একদিনের বৃষ্টিতেই লন্ডভন্ড শহর কলকাতা, জমা জলে একের পর এক মৃত্যুর ভয়াবহ ছবি। গতকাল আর আজকের দিন মিলিয়ে, ১২জন সহনাগরিককে হারিয়েছেন কলকাতাবাসী। জমা জলে তড়িতাহত হয়ে পর পর মৃত্যু। আর আজ, জমা জলে নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়ে, তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে এক পুরকর্মীর।
মঙ্গলবার সকালে, কলকাতার নেতাজিনগরের জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রাণতোষ কুণ্ডুর। প্রাণতোষ পেশায় একজন ফল ব্যবসায়ী। তাঁকে হঠাৎ হারিয়ে ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবার। কিন্তু চাকরি বা সরকারি সাহায্য়, কোনোটাই নিতে নারাজ তাঁর পরিবার। প্রাণতোষ কুণ্ডু পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন বিজেপির প্রতিনিধি দলও। কিন্তু পরিবারের তরফ থেকে সমস্তরকম আর্থিক সাহায্য প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
এবিপি আনন্দের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রাণতোষ কুণ্ডুর পুত্র দোলন কুণ্ডু বলেন, 'আমার বাবা জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। এটা স্বাভাবিক মৃত্যু না। কেন এই ঘটনা ঘটল, আমরা এখনও জানতে পারিনি। নিশ্চয়ই কোনও ফল্ট ছিল যার কারণে এই ঘটনাটা ঘটল। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী রাজ্য সরকার ও CESC। প্রত্যেক বছরই বৃষ্টি হয় আর এভাবে মৃত্যু ঘটে। CESE যদি দায়িত্ব নিতে না পারে, তাহলে বছরের পর বছর কেন তারাই থেকে যাবে? সেখানে অন্য কেউ আসবে না কেন? তাহলে কি পুরনো কোনও সমঝোতা?'
সত্যিই কি সরকারের তরফ থেকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল দোলন কুণ্ডুকে? তিনি বলছেন, 'চাকরির প্রতিশ্রুতি আমি পাইনি। এটা হাওয়ায় কথা। তবে চাকরির প্রতিশ্রুতি পেলেও আমি চাকরি করব না। কোনওরকম সাহায্যের প্রয়োজন নেই।' অন্যদিকে আজ, বিজেপির ৪ বিধায়কের প্রতিনিধি দল মৃতের বাড়িতে। পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন বিজেপির প্রতিনিধিরা। দোলনের মতে, 'এসেছেন ভাল লাগল, কোনওরকম সাহায্য চাই না'। বিজেপি প্রতিনিধি দলে তুফানগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক মালতি রাভা রায়। প্রতিনিধি দলে কালচিনির বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামা। প্রতিনিধি দলে কালিয়াগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক সৌমেন রায়। প্রতিনিধি দলে হবিবপুরের বিজেপি বিধায়ক জুয়ের মুর্মু।
চাকরি চাই না, চাই না কোনও আর্থিক সাহায্যও। পুজোর মুখে চলে গিয়েছেন পরিবারের আপনজন। সেই শোক কীভাবে সামলাবেন, সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না পরিবার। তবে কোনও সরকারি সাহায্য নিতে চান না প্রাণতোষ কুণ্ডুর পরিবার।