করুণাময় সিংহ, সুদীপ চক্রবর্তী ও সত্যজিৎ বৈদ্য, উত্তর দিনাজপুর: এখনও আতঙ্কে রয়েছে, কালিয়াগঞ্জের (Kaliyaganj) নিহত রাজবংশী যুবক (Rajbanshi Youth Killed) মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের পরিবার। কার্যত আত্মগোপন করে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। মালদায় সপরিবারে আশ্রয় নিয়েছেন নিহতের বাবা ও দাদা। সেখান থেকেই বিস্ফোরক দাবি করেছেন তাঁরা।


কী পরিস্থিতি?
ছেলের মৃত্যুশোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তার উপর আর এক চাপ। নিহত রাজবংশী যুবক,  মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাবা রবীন্দ্রনাথ বর্মনের বাবা ক্যামেরার সামনে বলেই ফেললেন, 'আতঙ্ক মানে বিশাল আতঙ্ক রয়েছি।' মৃত্যুঞ্জয় বর্মন খুনের পর ১০ দিন পার হয়েছে। কিন্তু এখনও আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছে তাঁর পরিবার। পরিস্থিতি এমন যে, তাঁদের কার্যত আত্মগোপন করে থাকতে হচ্ছে। কালিয়াগঞ্জ থেকে বহুদূরে মালদায় সপরিবারে আশ্রয় নিয়েছেন নিহত মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা ও দাদা। গত শুক্রবার মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারের সদস্যদের কালিয়াগঞ্জের চাঁদগাঁর বাড়িতে নিয়ে আসেন জাতীয় তফশিলি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। কিন্তু, নিরাপত্তার অভাব বোধ করায়, তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মালদায়। রবীন্দ্রনাথ বর্মনের কথায়, 'বাড়িতে ফিরতে পারছি না এখন, আতঙ্ক তো আছেই, এরা যে কোনও মুহুর্তে বাড়িতে ঢুকে বা দরজা ভেঙে ঢুকে এরা সব কিছু করতে পারে। আমাদের পরিবারের সবার সই করিয়ে নিয়ে চলে গেল। আর যা কিছু লিখে দিল। মেরে দিতে পারে, পিস্তল দেখাতে পারে।' নিহত যুবকের পরিবার যে এই মুহূর্তে বাড়িতে নেই সে কথা জানালেন তাঁদের পড়শিরাও। সম্প্রতি, এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় কালিয়াগঞ্জে। থানায় হামলা হয়। মার খায় পুলিশ! সেই ঘটনার জেরে পুলিশি অভিযানে রাজবংশী যুবক মৃত্যুঞ্জয় বর্মনকে গুলি করে মারার অভিযোগ ওঠে। নিহতের দাদা, মৃণালকান্তি বর্মনের দাবি, 
'পুলিশ-প্রশাসন এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাহলে আমাদের পুলিশের প্রতি ভরসা থাকল কোথায়? আমার ভাইকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে, তোমার নাম কী? আমার ভাই বলে যে, মৃত্যুঞ্জয় বর্মন। তখন কিছুদূর এগিয়ে যায়, এগিয়ে যাওয়ার পর আবার আমাদের দেখে তারপর গুলি করে। ভাই এইটুকু আমাকে বলল যে, সামনের দিকে যাস না ফায়ার করছে। ওকে ফায়ারিং করার পর গুলিটা যে ওর লেগেছে আমি বুঝতেও পারলাম না, জানতেও পারলাম না। আমি CBI তদন্ত চাই।' শনিবার, কালিয়াগঞ্জের চাঁদগাঁয় নিহত রাজবংশী যুবক মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাড়িতে গিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি তোলেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিনিধিরাও। এর মধ্য়েই কালিয়াগঞ্জকাণ্ডে CBI তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে মামলা করেছেন পরিবারের সদস্যরা। আদালত কী রায় দেয়, সেই অপেক্ষাতেই রয়েছে নিহতের পরিবার।


আরও পড়ুন:হেঁটে-দৌড়ে ঝরাতে চান অতিরিক্ত মেদ? তাহলে অবশ্যই মেনে চলুন এই নিয়মগুলো