পার্থপ্রতিম ঘোষ, উজ্জল মুখোপাধ্য়ায় ও বিটন চক্রবর্তী: সাধারণ মানুষ তো মুখ খুলেছে আগেই। এবার শিবু হাজরা-উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে অত্য়াচারের অভিযোগ তুললেন সন্দেশখালির প্রাক্তন তৃণমূল নেতারা। অভিযোগ, শুধু যে তাঁদের পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে তা নয়, সঙ্গে চলেছে নৃশংস অত্য়াচার, মারাত্মক মারধর। (Sandeshkhali Situation)
এ নিয়ে মুখ খুলেছেন সন্দেশখালি ২ নং ব্লকের প্রাক্তন বুথ সহ-সভাপতি সুদেব গিরি। তিনি জানিয়েছেন, দিনের পর দিন অকথ্য অত্যাচার চলেছে। প্রায় দেড় মাস মতো বিছানায় পড়েছিলাম। চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার মতো টাকা ছিল না। খাওয়াও জুটছে না তাঁদের। কেউ নেই এসব কথা জানানোর জন্য। (Sandeshkhali Situation)
কেউ তৃণমূলে আছেন প্রায় ১৬ বছর, কেউ বা ১০ বছর। দীর্ঘদিন কেউ সামলেছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ। কিন্তু অভিযোগ তাঁদেরকেই শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের অত্য়াচারের শিকার হতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, অভিযোগ, ক্ষমতায় এসেই প্রথমে দীর্ঘদিনের পুরনো তৃণমূল নেতাদের পদ থেকে সরিয়ে দেয় শেখ শাহজাহানের শাগরেদরা।
তিনি নিজেই সরে গিয়েছিলেন নাকি, সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে, জানতে চাওয়া হয় সুদেবের কাছে। তিনি বলেন, "সরিয়ে দেওয়া হয়। উত্তম সর্দার, শিবু হাজরা। ওরা তো নতুন করে তৈরি করে নিল! আমাদের কোনও ভূমিকা নেই এখানে। আমরা পুরনো তৃণমূল। আমরাই সন্দেশখালিতে তৃণমূলকে এনেছিলাম।"
শিবু এবং উত্তমরা তাঁকে বেত দিয়ে মেরেছে বলেও জানান সুদেব। কাজের পারিশ্রমিক চাইতে গেলে কুকথা শুনতে হয়েছে বলে জানান। প্রশাসনকে জানাতে গেলেও অত্যাচার নেমে আসে বলে জানান তিনি।
একই ভাবে, সন্দেশখালি ২ নং ব্লকে তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি তাপস দাস বলেন, "আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালবাসি। ওঁর কাছে নিবেদন, উনি সন্দেশখালি ২ নং ব্লকে এসে পরিস্থিতি দেখে যান। যাঁদের বহিরাগত বলা হচ্ছে, একবার তাঁদের দিকে তাকানো উচিত। সন্দেশখালির অধিকাংশ মানুষই তৃণমূল করেন।"
সন্দেশখালিতে বহিরাগতদের প্রবেশ ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সুদেবের দাবি, শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরা এবং উত্তমরাই বহিরাগত। তাঁরাই সন্দেশখালির কেউ নন। এ নিয়ে সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "শেখ শাহজাহানরা পুলিশের ঘেরাটোপে। দুষ্কৃতীদের রাজত্বে পুলিশ এই মাফিয়া রাজত্ব চালাচ্ছে।" সব মিলিয়ে সন্দেশখালিতে অস্বস্তিতে শাসক।