অর্ণব মুখোপাধ্যায়, সন্দীপ সরকার ও বিজেন্দ্র সিংহ, কলকাতা: গঙ্গাসাগর মেলার জাতীয় স্বীকৃতি থেকে সুন্দরবন মাস্টার প্ল্যান - জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে, প্রধানমন্ত্রীর সামনে এই সমস্ত দাবিদাওয়া তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনটাই সূত্রের খবর। এদিনই আদি গঙ্গা পুনরুদ্ধারে আর্থিক বরাদ্দ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
কয়েকদিন পরই গঙ্গাসাগর মেলা। প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির দিন লক্ষ লক্ষ মানুষ পুণ্যস্নানের জন্য গঙ্গাসাগরে যান। এই প্রেক্ষাপটে, শুক্রবার জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে, প্রধানমন্ত্রী ও একঝাঁক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সামনে গঙ্গাসাগরকে জাতীয় তীর্থ অথবা জাতীয় মেলার তকমা দেওয়ার দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুক্রবার পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, খিদিরপুরে INS সুভাষের অডিটোরিয়ামে শুরু হয় বৈঠক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এবং বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। মাতৃবিয়োগের কারণে শুক্রবার কলকাতা সফর বাতিল হলেও ভার্চুয়ালি এই বৈঠকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
আলোচনায় উঠে আসে সুন্দরবনের সঙ্কটের প্রসঙ্গ। আয়লা থেকে আমফান - ঝড়-ঝঞ্ঝার প্রথম ধাক্কাটা সহ্য করতে হয় সুন্দরবনকেই। ফি বছর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয়। সূত্রের খবর, এই সমস্য়ার সমাধানের লক্ষ্যে সুন্দরবন মাস্টারপ্ল্যানে কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলায় নদী ভাঙন একটা বড় সমস্যা। বিশেষ করে মালদা, মুর্শিদাবাদে নদী ভাঙনের সঙ্কটের সঙ্গে যুঝতে হয় বহু মানুষকে। এদিন জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে সেই বিষয়টিও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সামনে তিনি প্রস্তাব দেন, উপকূলবর্তী এলাকাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন করা উচিত নীতি আয়োগের। এদিন, জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে, আদি গঙ্গা পুনরুদ্ধার, জলপথে পর্যটনের প্রসার। আন্তর্জাতিক ক্রুজ পরিষেবার মতো প্রসঙ্গ।
এদিন ভার্চুয়াল বক্তৃতা দেওয়ার সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, নমামি গঙ্গে প্রকল্পে, ২৫টিরও বেশি নিখাশি প্রকল্প বাংলার জন্য অ্যাপ্রুভ করা হয়েছে। তার মধ্যে ১১টি প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। ৭টি প্রকল্পের কাজ আজ শেষ হয়েছে। ১৫০০ কোটি চাকা ব্যয়ে ৫টি নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে।
আদি গঙ্গা পুনরুদ্ধারের জন্য ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছে। ১৩ জানুয়ারি কাশী থেকে বারাণসী পর্যন্ত একটা ক্রুজ আসবে বাংলাদেশ হয়ে। এটা বিশ্বের মধ্যে অভূতপূর্ব ক্রুজ পরিষেবা। বাংলার মানুষদেরও এটা উপভোগ করতে বলব। এদিন জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠক শুরুর আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে রাজ্যের ২ মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অভ্যাগতদের সম্মান জানান।