অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : মেয়রের ( Firhad Hakim ) বিধানসভা এলাকাতেই বেআইনি বহুতল ভেঙে মৃত্যু। ভয়াবহ দুর্ঘটনা। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল বহুতল। মাত্র তিন ফুটের রাস্তায় ধাপে ধাপে উঠে গেল বহুতল, অথচ প্রশাসনকে একবার ভাবালও না। দুর্ঘটনার পর দেখা গেল, প্রশাসনের নাকের ডগায় পুরসভার অনুমতি ছাড়াই তৈরি হচ্ছিল বহুতলটি। আশপাশে ধরা ঝুপড়ি, বহু মানুষের বাস। তাই এলাকায় আতঙ্ক ছিলই এই নির্মাণ ঘিরে। স্থানীয় মানুষদের থেকে এসেছিল আপত্তিও। কিন্তু কে কার কথা শোনে। এখন বিরাট এই বিপর্যয়ের পরে পুরমন্ত্রী মানলেন বেআইনি নির্মাণের ( Garden Reach Building Collapse ) কথা। ক্ষমতায় আসার ১৩ বছর পরেও ঘটনার দায় বাম আমলের উপর চাপালেন ফিরহাদ।
গার্ডেনরিচের পাহাড়পুরে বহুতল-বিপর্যয়ের ঘটনায় বাম আমলকেই দায়ী করলেন মেয়র ও পুর-নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁর দাবি, বাম জমানা থেকেই ওই এলাকায় বেআইনি নির্মাণের প্রবণতা তৈরি হয়েছে। তাই তৃণমূল সরকার ও তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার তরফে নানা পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও বেআইনি নির্মাণ করা থামেনি।
বাম আমলকে দুষেও, স্বীকার করলেন নজরদারির অভাব ছিল পুরসভার তরফেও। দায় চাপালেন পুরসভার আধিকারিকদের ঘাড়ে। যদিও ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সামস ইকবালকে ক্লিনচিট দিয়েছেন মেয়র।
বাম আমলের সমস্যাগুলি কীভাবে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে তৃণমূল সরকার, তারও ব্যাখ্যা দেন কলকাতার মেয়র।
ফিরহাদ বলেন, 'এসব এলাকায় বাম আমল থেকে বেআইনি নির্মাণ চলছে। কারণ,সে সময়ে প্রশাসনের কাছ থেকে নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যেত না। অনুমতি জোগাড় করতে অনেক হেনস্থা হতে হত। বিএলআরও অফিসে গিয়ে পায়ের চটি ক্ষয়ে যেত। তাই প্রোমোটারেরা বেআইনি নির্মাণের পথে হাঁটতেন।'
তবে ফিরহাদের দাবি, তৃণমূল সরকার এই অনুমতি জোগাড়ির পদ্ধতি অনেক সহজ করে দিয়েছে। তাও কিছু লোক বেআইনি নির্মাণ করছেন। বিএলআরও অফিস এখন কলকাতা পুরসভা চত্বরে নিয়ে গিয়েছেন মেয়র। তবুও কেন এই প্রবণতা ভাবাচ্ছে তাঁকে। মেয়রের আশ্বাস এই নির্মাণের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ফিরহাদ এদিন ওই বহুতলের প্রোমোটারকে গ্রেফতার করার কথা বলেন। জানান, তিনি শুনেছেন, ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করাও হয়েছে।
পরে অবশ্য মেয়র বলেন, ভেঙে পড়া বহুতলটি সাম্প্রতিককালেই তৈরি করা হচ্ছিল। সেই সঙ্গে বলেন, 'কেন বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে, সেটাই বিস্ময়। সব জায়গায় নজর রাখা সম্ভব নয়, এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এক প্রোমোটার গ্রেফতার হয়েছেন'
জানান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তবে জলাভূমি ভরাটের কথা জানা নেই বলে দাবি মেয়রের।
অন্যদিকে, ১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান রঞ্জিত শীলের দাবি, পুুকুর বুজিয়ে বছরখানেক ধরে তৈরি হচ্ছিল গার্ডেনরিচের ওই বহুতল। এই এলাকায় পুরসভার সঙ্গে প্রোমোটারদের লুকোচুরি খেলা চলে।বহু ক্ষেত্রেই দোতলা, তিনতলা তৈরির ছাড়পত্র নিয়ে বানিয়ে ফেলা হয় ৫ তলা, ৬ তলা বাড়ি। ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের সামস ইকবাল এদিন সকালেই দুবাই থেকে কলকাতায় ফেরেন।
আরও পড়ুন :