সন্দীপ সরকার, কলকাতা : গিয়ান ব্যারে সিনড্রোমে মহারাষ্ট্রে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাতেও একাধিক গিয়ান ব্যারে সিনড্রোম আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। চিকিৎসা চলছে একাধিক শিশুর। মৃত্যু সংবাদও এসেছে একাধিক জনের। চিকিৎসকরা বলছেন, এই রোগ নিয়ে আতঙ্ক নয়, সচেতনতার প্রয়োজন। এই পরিস্থিতিতে গিয়ান ব্যারে সিনড্রোম নিয়ে হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করল রাজ্য সরকার।


রবিবারই রাজ্য দু’ দফায় ভার্চুয়াল বৈঠক করে হাসপাতালগুলির সঙ্গে।  হাসপাতালে এই রোগের চিকিৎসার পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। সূত্রের খবর,  বৈঠকে জানতে চাওয়া হয়, গিয়ান ব্যারে সিনড্রোমে আক্রান্তের সংখ্যা কত, রোগীদের শারীরিক অবস্থা কেমন।


হাসপাতালগুলিকে রাজ্যের নির্দেশ : 



  • হাসপাতালে নিউরোলজি বিভাগে অন্তত ২টি CCU বেড  রাখতে হবে। 

  • শিশুদের জন্য পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ২টি বেড প্রস্তুত রাখতে হবে। 

  • ICU এবং Pediatric Intensive Care Unit -তে কী পদ্ধতিতে চিকিৎসা হবে, তাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। চিকিৎসার প্রোটোকল তৈরি করে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

  • রাজ্যের নির্দেশ, প্রয়োজন ছাড়া ইনট্রা ভেনাস ইউমিউনো গ্লোবিউলিন বা প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ নয়।

  • GB সিনড্রোমে আক্রান্তদের সম্পর্কে তথ্য পাঠাতে হবে স্বাস্থ্য ভবনে। 

    এর আগেই গত মাসের ২৯ তারিখ রাজ্যের গিয়ান ব্যারে সিনড্রোম পরিস্থিতি জানতে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন স্বাস্থ্য কর্তারা। স্বাস্থ্য ভবনে বৈঠকে সেদিন যোগ দিয়েছিলেন বিভিন্ন হাসপাতালের স্নায়ুরোগ, শিশুরোগ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরাও বৈঠকে ছিলেন। 

    GB সিনড্রোমের হটস্পট পুণে। মহারাষ্ট্রে সন্দেহভাজন আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৯, এদের মধ্যে ১২৪ জন GB সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল পুণেতে গিয়ান ব্যারে সিনড্রোমে মৃত্যু হয়েছে ৬০ বছরের এক প্রৌঢ়র।  

    কী এই GB সিনড্রোম?

    চিকিৎসকরা বলছেন, GB সিনড্রোম আসলে 'অটোইমিউন ডিসঅর্ডার', যা ক্রমশ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। রোগীর স্নায়ুতন্ত্রে আঘাত হানে।  এর প্রাথমিক লক্ষণ নিম্নাঙ্গ অসাড় হয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে দুই পায়েই অসাড় ভাব লক্ষিত হয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রথমে পা বা কোমর অবশ হয়ে যায়। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারেন রোগী। একে একে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অসাড় হয়ে পড়ে। চলে যায় কথা বলার ক্ষমতা। এরপর রোগ আটকানো না গেলে, দুর্বল হয়ে যায় স্নায়ু এবং ফুসফুসের পেশি। শ্বাস প্রশ্বাস নিতেও সমস্যা দেখা যায়। শ্বাসযন্ত্র অবধি রোগ ছড়ালে তা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। 


    আরও পড়ুন: অযোধ্যায় নির্ভয়াকাণ্ডের ছায়া, দলিত তরুণীকে পাশবিক অত্যাচার, ধর্ষণ করে খুন