কলকাতা: এখনও স্কুলের গণ্ডি পেরোয়নি মেয়ে। তাকে নিয়েই অসম লড়াইয়ের মুখোমুখি মা-বাবা। অ্যাডিনোভাইরাস (Adenoviruses) আক্রান্ত মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে কার্যত সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। কারণ বিগত ৩৫ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি মেয়ে। তার চিকিৎসায় এখনও পর্যন্ত ৪৫ লক্ষ টাকার বিল ধরানো হয়েছে হাসপাতালের তরফে (Kolkata News)। 


যত দিন যাচ্ছে, ততই ভয়াবহতা বাড়ছে


জ্বর-সর্দির মতোই, তবে ভোগান্তি ঢের বেশি, শিশুরাই মূলত ভুক্তভোগী, অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে এমনই শোনা গিয়েছিল শুরুতে। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, ততই ভয়াবহতা বাড়ছে। শহর জুড়ে শিশুমৃত্যুর খবর মিলছে প্রতিদিনই। তার বাইরেও অ্যাডিনোর চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরিবারগুলির কী অবস্থা হচ্ছে, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ বাগুইআটির সুকান্ত বসু এবং তাঁর পরিবার।


বাগুইআটির জ্যাংড়ার বাসিন্দা সুদেষ্ণা বসু। অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মেয়েটি। জানুয়ারি মাসে অ্যাডিনোয় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় সে। আপাতত তার ঠিকানা বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতাল। একমো সাপোর্টে রয়েছে ছোট্ট মেয়েটি। আর তাতে এতদিনে তার চিকিৎসার খরচ ৪৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে। সুদেষ্ণার বাবা LIC-র এজেন্ট। তার পক্ষে এই খরচ সামলানো একপ্রকার অসাধ্য। কিন্তু ছোট্ট মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে লড়ে চলেছেন তিনি।


আরও পড়ুন: Adenoviruses: শিশুমৃত্যু বৃদ্ধিতে উদ্বেগ, 'সরকার সতর্ক রয়েছে', বললেন ফিরহাদ


পরিবার সূত্রে খবর, কিছু দিন আগে সুদেষ্ণার বোনও অ্যাডিনো আক্রান্ত হয়। সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছে সে। ১৯ জুন সুদেষ্ণার জন্মদিন। তার আগে সেও হাসিমুখে বাড়ি ফিরবে, এটুকুই চায় জ্যাংড়ার বসু পরিবার। সুকান্তবাবু বলেন, "কী ভাবে টাকা দেব জানি না। এখনও পর্যন্ত ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা করতে পেরেছি। চিকিৎসরা সাহস জোগাচ্ছেন যদিও। এখন তো আর চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া যায় না!" সুদেষ্ণার মা দেবাঞ্জনা বসু বলেন,"মেয়ে কবে আসবে জানি না। সকলের কাছে অনুরোধ, আপনারা যদি একটু এগিয়ে আসেন, আমরা লড়াই চালিয়ে নিয়ে যেতে পারব।"


২ মাসে রাজ্যে ৯৪ জন শিশুর মৃত্যু হল


যত সময় যাচ্ছে, রাজ্য জুড়ে বাড়ছে অ্যাডিনো আতঙ্ক। বি সি রায় হাসপাতালে ৭ ঘণ্টায় আরও ৬ শিশুর মৃত্যু। এই নিয়ে ২ মাসে রাজ্যে ৯৪ জন শিশুর মৃত্যু হল। যে সব হাসপাতালে শিশুদের বহির্বিভাগ নেই, সেখানে অ্যাাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস ক্লিনিক খোলার জন্য পাঠানো হচ্ছে বাড়তি চিকিৎসক। জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সচিব।