সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: ব্রিগেডে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে চিকেন প্যাটিস বিক্রেতাকে পিটিয়েও জামিন পেয়ে গেল অভিযুক্তরা। চিকেন প্যাটিসকাণ্ডে গ্রেফতারির ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ধৃত ওই ৩ জনের জামিন দেওয়া হল। মূলত গত রবিবারে ব্রিগেডে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে চিকেন প্যাটিস বিক্রেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। যদিও শেষ অবধি তিন জনকে আদালতে তোলা হলে, জামিন দেওয়া হয়। ধৃত সৌমিক গোলদার, তরুণ ভট্টাচার্য ও স্বর্ণেন্দু চক্রবর্তীর জামিন দেওয়া হল খবর।
আরও পড়ুন, 'এক চোখে দুর্যোধন, অন্য চোখে দুঃশাসন', অমিত শাহকে আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
আরও পড়ুন, গ্রেফতারির ১২ ঘণ্টার মধ্যে, চিকেন প্যাটিস বিক্রেতাকে যে মারধর করা হয়েছিল, সেই অভিযোগে ময়দান থানার তরফে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গোবরডাঙা, অশোকনগর, উত্তরপাড়া থেকে ওই তিন অভিযুক্তকে মোবাইল ফোনের ফুটেজের মাধ্যমে, আইডেন্টিফাই করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে যেটা জানা যাচ্ছে যে, এই তিনজনকে কিছুক্ষণ আগেই ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজার টাকার ব্যাক্তিগত বন্ডে, তাঁদেরকে জামিন দেওয়া হয়েছে। যদিও পুলিশের তরফ থেকে ১৪ দিনের ফুলটার্ম পুলিশি হেফাজত চাওয়া হয়েছিল। পুলিশের যুক্তি ছিল, ধৃত এই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, আরও যারা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, কী তাঁদের পরিকল্পনা ছিল, সেটা জানা জরুরি।
প্রশ্ন: ঠিক কীসের ভিত্তিতে তাঁদেরকে জামিন দেওয়া হয়েছে ?
অ্যাডভোকেট দেবজিৎ সরকার: প্রথমকথা যেকটা ধারা দেওয়া হয়েছে, তাঁর মধ্যে ১ টা ছাড়া, সবগুলিই জামিনযোগ্য। জামিন অযোগ্য যে ধারাটা দেওয়া হয়েছিল, সেখানে বলা হয়েছিল যে, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের যুক্তি ছিল, যে কে আঘাত করলেন ? কার ধর্মীয় ভাবাবেগে ? প্রথম কথা হচ্ছে, একটা গীতাপাঠের মতোন অনুষ্ঠান, যেখানে কিনা অভিযুক্ত যারা, তাঁরা সেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছিলেন। তাঁরা ভেজ প্যাটিস বলে যে প্যাটিস বেল যে প্যাটিস কিনতে গেলেন, বিক্রেতা তাঁদের ভেজ প্যাটিস বলেই বিক্রি করলেন। প্যাটিস ভাঙার পরে দেখা গেল, সেটা চিকেন প্যাটিস। আমি একটা বলতে চাই, তাহলে ধর্মীয় বিশ্বাসে কে কার আঘাত করলেন ? তাহলে একটা মিস-অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন হল ! ভেজ বলে নন ভেজ বা চিকেন বিক্রি-এটা কীরকম ধরণের কথা হল ? একই সঙ্গে কলকাতায় যারা থাকেন, তাঁরা কলকাতারই বাসিন্দা, কলকাতারই গড়ের মাঠে তাঁরা প্যাটিস বিক্রি করেন, তাঁরা জানেন না , তাঁদের প্রতিবেশি হিন্দুরা, তাঁরা অন্তত গীতাপাঠের আসরে, চিকেন খেয়ে গীতাপাঠ করতে ওঠেন না ?! খাদ্য যার যার, কিন্তু এই দিনে, যেটা স্পেসিফিক, কেউ যদি বলে এই আক্রমনাত্বক যে ষড়যন্ত্র, তার বিরুদ্ধে একটা কমপ্লেনও হয়েছে। এখন অদ্ভুত ব্যাপার কাল সারারাত্রির পুলিশ, উত্তর ২৪ পরগনা-কলকাতার বহু জায়গায় হানা দিয়ে, অভিযুক্ত ব্যাক্তিদের গ্রেফতার করেছে, শুনছি নাকি, পুলিশ মন্ত্রী আস্ফালন করেছেন, সবকটাকে গ্রেফতার করেছি। ...কিন্তু কাকে ধরলেন ? যে অত্যাচারিত তাঁকে ধরলেন, যিনি অত্যাচার করলেন, যিনি ভাবাবেগে আঘাত করলেন প্রকৃত, তার নামেও কমপ্লেন আছে। একদিকে প্রশাসনিক কাজে অতি নিষ্কৃয়তা, এদের না ধরাতে, যে দুজনের নাম আপানারা বললেন, অন্যদিকে প্রশাসনিক অতিসক্রিয়তা, এটা একদমই ঠিক নয়। পুলিশের অন্তত নিরপেক্ষ হওয়া উচিত, রাজনৈতিক দল যাই হোক।