শিলিগুড়ি: রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আচার্যের পদে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি এমনই একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব রাজ্য-রাজনীতি। পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিয়েছেন বাংলার শিক্ষাবিদরাও। এবার এই ইস্যুতে মুখ খুললেন খোদ রাজ্যপাল। এসএসসি দুর্নীতি (SSC Scam) থেকে সবার নজর ঘোরাতেই এমন কাজ বলে মন্তব্য রাজ্যপালের। 


কী বলেছেন রাজ্যপাল:
রবিবার শিলিগুড়িতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) বলেন, 'এসএসসি-দুর্নীতি থেকে নজর ঘোরাতেই ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে। রাজ্যপালের ভূমিকা খর্ব করার বিষয়ে নথি এলে দেখব।' তিনি আরও বলেন, 'সরকার এই বিষয়ে কী বলছে তাতে আমি ভাবিত নই। নিয়োগ-দুর্নীতি হাজার হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছে। সেই বিতর্ক থেকে নজর ঘোরাতেই এইসব চক্রান্ত করা হচ্ছে।' 


কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে এমন কথা: 
রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের (University) আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরাতে চায় রাজ্য সরকার। সেই পদে মুখ্যমন্ত্রীকে আনতে চাওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীই হবেন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, সম্প্রতি এই নিয়ে প্রস্তাব পাশ হয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভায়। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বলেছিলেন, 'রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী। আজকে রাজ্যের মন্ত্রিসভা সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।' মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করতে চেয়ে বিধানসভায় বিল (Bill) আনছে সরকার। রাজ্যপাল অনুমতি না দিলে অর্ডিন্যান্স জারি করবে সরকার, খবর সূত্রের।


সরব বিরোধীরা:
বাম থেকে ডান, সকলেই এই ইস্যুতে কার্যত শাসক দলকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। বিজেপি (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'অন্য উদ্দেশ্যে এই কাজ হচ্ছে। বেকার যুবক-যুবতীদের কাজের ব্যবস্থা করুন। পেট্রোলের দাম কমান, বিজেপি শাসিত রাজ্যে তো কমেছে। নজর ঘোরানোর জন্য় এই কাজ হচ্ছে।' সিপিএম (CPIM) নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'এর চাইতে কলুষিত কাজ হতে পারে না। সিবিআই-এর কাছে এ রাজ্যের মন্ত্রীদের হাজিরা দিতে হয়। তাঁরা এমন পদে বসবেন?'


তৃণমূলের কটাক্ষ:
তৃণমূল (TMC) নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, 'শিক্ষা দফতর সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মনোনীত ব্যক্তির থেকে নির্বাচিত ব্যক্তিকে আনা ভাল। অন্য রাজ্যেও এমন ভাবনা হয়েছে। বিশ্বভারতীতে প্রধানমন্ত্রী আচার্য। বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখ্যমন্ত্রী আচার্য বলে এত বিতর্ক কেন?'


শাসক দলের পাশে শিক্ষাবিদ:
বর্ষীয়ান শিক্ষাবিদ নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি, 'রাজ্যপাল মুখ খুলছেন। উনি লজ্জিত হচ্ছেন না। যে ভাষা ব্যবহার করছেন। সেটি কী বিরোধী দল ব্যবহার করেন না? বিজেপি যে ভাষায় কথা বলছেন, রাজ্যপালও সেই ভাষায় কথা বলছেন। ওঁর মর্যাদা নষ্ট হল, তার জন্য লজ্জিত না হয়ে বিরোধী দলের মতো ভাষা প্রয়োগ করছেন।'


আরও পড়ুন: 'একজন সাংসদ সীমা অতিক্রম করেছেন', রাজ্যপালের নিশানা কি অভিষেক?