কলকাতা: রাজ্যপালের অপসারণ-নির্দেশ অগ্রাহ্য করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে হাজির বুদ্ধদেব সাউ। রাজ্যপালের বরখাস্ত করা উপাচার্যের পৌরোহিত্যেই সমাবর্তনের আয়োজন করার আর্জি জানিয়েছে রাজ্য সরকার। সমাবর্তনের আগে কোর্ট বৈঠক করবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সমাবর্তন কার পৌরোহিত্যে হবে উপাচার্য নাকি সহ উপাচার্য? শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সমাবর্তনে যোগ দেবেন, নাকি রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সি ভি আনন্দ বোস উপস্থিত থাকবেন? এই নিয়ে দোলাচলের মাঝেই বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির হয়েছেন ডিগ্রি প্রাপকরা।


এদিকে, শনিবার নিজের নিযুক্ত অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে নিজেই সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।  ২৪ ডিসেম্বর অর্থাৎ আজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এমনটাই জানিয়েছিল এডুকেশনিস্ট ফোরামের সদস্যরা। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজভবন সূত্রে জানা যায়, যাদবপুরের অন্তবর্তী উপাচার্যকে সরিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। 


কেন এই ঘটনা? 



সংশ্লিষ্ট শিক্ষামহলে প্রশ্ন উঠেছে, সমাবর্তনের জন্য উদ্যোগী হয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়াতেই কি পদ খোয়াতে হল বুদ্ধদেব সাউকে ? ব্রাত্য বসুর কাছে সুরাহা চাইতে গিয়েই কি সি ভি আনন্দ বোসের রোষে পড়লেন বুদ্ধদেব সাউ ? গোটা ঘটনার মাঝে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র রাজ্যপাল তথা আচার্যকে নিশানা করে বলেছেন, চূড়ান্ত বেআইনি। উনার মনোনীত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে সরিয়েছেন। অনৈতিক।


পরিস্থিতি এমন তৈরি হয় যে, রাজ্যপাল তথা আচার্যর অনুমতি ছাড়াই এবার সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়ার তোড়জোড় শুরু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর তারপরই এবার নিজের নিযুক্ত অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে সরিয়ে দিলেন রাজ্যপাল। যাদবপুরে পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনার পর যাঁকে দায়িত্বে বসিয়েছিলেন আচার্য সিভি আনন্দ বোস। তবে এদিন রাজ্যপালের নির্দেশ অগ্রাহ্য করেই মঞ্চে দেখা যায় বুদ্ধদেব সাউকে। 


আরও পড়ুন, আদালতে খারিজ পুলিশের দাবি, চাকরি চেয়ে জেল খাটার পর জামিন ৫৫ জন চাকরিপ্রার্থীর


রাজ্যপাল তথা আচার্য নিযুক্ত অন্তর্বর্তী উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে থাকায় এবং উপাচার্য নিয়োগ মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন থাকায় পদ্ধতিগত নানা রকম সমস্যা সমাবর্তনের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। সূত্রের খবর, এর আগে মামলার কারণ দেখিয়ে রাজভবন থেকে সমাবর্তন স্থগিত রাখার কথা বলা হয়। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলপন্থী শিক্ষক ও এডুকেশনিস্ট ফোরামের সদস্যরা দাবি করেন, স্থায়ী উপাচার্য দায়িত্বে থাকলে, কোর্ট মিটিং ডেকে সমাবর্তনের অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হয়। উচ্চ শিক্ষা দফতর অনুমতি দেওয়ায় সমাবর্তন করায় কোনও বাধা নেই।