সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : পরীক্ষায় (Examination) ফেল করেও গ্রুপ-ডি (Group D) চাকরি (Recruitment)! গ্রুপ ডি-তে ৯০ জনের ভুয়ো চাকরি মামলায় মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) রিপোর্ট পেশ করে এসএসসি (SSC)।
এসএসসি-র যে রিপোর্ট অসম্পূর্ণ বলে জানিয়ে ফের রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্ট। বিস্তারিত রিপোর্ট পেশের পাশাপাশি নির্দিষ্ট ৩ প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে আদালতের পক্ষ থেকে। প্রথমত, মেধা তালিকা না থেকেও চাকরি কীভাবে ? দ্বিতীয়ত, মেধা তালিকায় পিছনে থাকাদের নিয়োগ কীভাবে ? আর তৃতীয়ত গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাঝে জাতিগত সংরক্ষণ মানা হয়েছে ? আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে শেষবার রিপোর্ট দিতে এসএসসিকে নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।


গ্রুপ ডি মামলাতে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে অবসরপ্রাপ্ত বিচাপতি আরকে বাণের নেতৃত্বে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ওঠা যাবতীয় দুর্নীতির সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। মাঝে ৯০ জন গ্রুপ ডি হিসেবে ভুয়ো নিয়োগপত্র পেয়েছেন বলে অন্য চাকরিপ্রার্থীদের তরফে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই কলকাতা হাইকোর্ট এসএসসি-র কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল। স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে সেই রিপোর্টই এদিন জমা পড়ে। যেটিকে অসম্পূর্ণ বলে জানিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দিষ্ট তিনটি বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছেন। পাশাপাশি ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।



গত ২২ নভেম্বর স্কুলে গ্রুপ-ডি কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায়CBI’কে দিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। অর্থাৎ, নিয়োগের জন্য যে সুপারিশপত্রগুলি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি কে ইস্যু করেছিল? এর পিছনে কাদের হাত রয়েছে? কোনও দুষ্কৃতীচক্র আছে কি না? প্রাথমিকভাবে তা খোঁজ খবর নিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা CBI এমনইটাই, নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে  ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এরপরই এসএসসি গ্রুপ ডি ‘দুর্নীতি’ মামলায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সিঙ্গল বেঞ্চের  নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। একইসঙ্গে  স্কুল সার্ভিস কমিশন ও পর্ষদকে নিয়োগ সংক্রান্ত সব নথি জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। সবদিক পর্যালোচনা করে সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ খারিজ করে দিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।


উল্লেখ্য গ্রুপ ডি-র (SSC Group D) ৫৭৩ জনের বেতন বন্ধ এবং চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সেই নির্দেশের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। গ্রুপ ডি মামলায় বিচারপতি হরিশ টন্ডন মন্তব্য করেছিলেন ‘এটা কি অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড, আগে গলা কেটে দাও তারপর বিচার?’ অর্থাৎ স্থগিতাদেশ মেলায় আপাতত গ্রুপ ডি-র (SSC Group D) ৫৭৩ জনের চাকরি বহাল থাকছে এবং বেতনও বন্ধ হচ্ছে না। গ্রুপ ডি (SSC Group D) মামলায়  সিবিআইকে (CBI) অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ। সেইসঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ নিযুক্ত কমিটিকে খারিজ করা হয়।


আরও পড়ুন- এসএসসি গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগে ‘দুর্নীতি’, অনুসন্ধানে আরও সময় চাইল কমিটি